গণফোরামের কাউন্সিলে মোকাব্বির খান

গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত মোকাব্বির খান গত ২ এপ্রিল দলীয় নির্দেশ অমান্য করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন। মোকাব্বির খানের জন্য নিজের দরজা বন্ধ বলেছিলেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তবে শুক্রবার দলের বিশেষ কাউন্সিলে মোকাব্বির খান অংশ নিয়েছেন।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে অনুষ্ঠিত দলটির কাউন্সিলে তিনি অংশ নেন। কাউন্সিলে সভাপতিত্ব করছেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংগীত ও পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কাউন্সিল শুরু হয়। ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত রয়েছেন সুব্রত চৌধুরী, রেজা কিবরিয়া, জগলুল হায়দার, আবু সাঈদ প্রমুখ।

এর আগে দলের আরেক সদস্য সুলতান মনসুর দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ায় তাকে বহিষ্কার করে গণফোরাম। তবে মোকাব্বিরের বিষয়ে দল এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। কাউন্সিলে কামাল হোসেনের তিন আসন পরই মঞ্চে বসেন মোকাব্বির খান।

কাউন্সিলে তার উপস্থিতি নিয়ে নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গণফোরামের প্রশিক্ষণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক বলেন, 'মোকাব্বির খানকে নিয়ে কামাল হোসেনের নানামুখী আচরণ রাজনীতির জন্য খুব কষ্টদায়ক।’

গণফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মোশতাক আহমেদ মোকাব্বিরের ব্যাপারে বলেন, তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তিনি জবাব দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্যের ভাষ্য, মোকাব্বির খানকে সম্ভবত দাওয়াত দেয়া হয়নি। তিনি নিজেই এসেছেন।

মোকাব্বির খান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে দলীয় প্রতীক উদীয়মান সূর্যে নির্বাচন করেন। নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আটটি আসনে জয়লাভ করে। এর মধ্যে বিএনপি ছয়টি ও গণফোরাম দুটি আসন পায়।

গণফোরামের আরেক সদস্য সুলতান মনসুর মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে লড়ে নির্বাচিত হন। গত ৭ মার্চ তিনি শপথ নেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নেওয়ায় তাকে গণফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হয়। ৭ মার্চ মোকাব্বির খানেরও শপথ নেয়ার কথা ছিল। এর আগের দিন তিনি সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। তবে মাসখানেক যেতে না যেতেই তিনি গণফোরামের প্যাডে শপথ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে চিঠি পাঠান। তিনি এটাকে দলীয় সিদ্ধান্ত বলে দাবি করলেও গণফোরাম জানায় ভিন্ন কথা।

গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ওই সময় অভিযোগ করেন, মোকাব্বির খান গণফোরামের প্যাড ‘চুরি’ করে সেই কাগজে স্পিকারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত হচ্ছে শপথ না নেয়ার। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেই তিনি শপথ নিচ্ছেন। পরে মোকাব্বির খানকে গণফোরাম কারণ দর্শানোর নোটিশও পাঠায়।

শপথ নেয়ার দুদিন পর ৪ এপ্রিল ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে মোকাব্বির খান দেখা করতে গেলে তিনি তাকে বের করে দেন বলে জানা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মোকাব্বির খান ড. কামাল হোসেনের চেম্বারের দরজা খুলে সালাম দিলে ড. কামাল হোসেন রেগে গিয়ে বলেন, ‘আপনি কার অনুমতি নিয়ে পত্রিকায় স্টেটমেন্ট দিয়েছেন যে গণফোরাম থেকে আপনাকে শপথ নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে? গণফোরাম সভাপতি আপনাকে অনুমতি দিয়েছে? আমি দ্বিতীয়বার আপনার চেহারা দেখতে চাই না। আই সে, গেট আউট। আপনার জন্য আমার দরজা চিরতরে বন্ধ। আমার বাসা চেম্বার কোথাও আসবেন না।’

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: