অলি আহমদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম

‘জাতীয় মুক্তিমঞ্চ’ নামে নতুন একটি রাজনৈতিক মঞ্চের ঘোষণা দিলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সভাপতি অলি আহমদ। নবগঠিত এই প্ল্যাটফর্মে কল্যাণ পার্টিসহ ২০ দলীয় জোট শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ ও ন্যাশনাল মুভমেন্ট রয়েছে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসে অলি আহমদ ‘জাতীয় মুক্তিমঞ্চ’ গঠনের ঘোষণা দেন।

অলি আহমদ জানিয়েছেন, নতুন প্ল্যাটফর্ম গঠন করলেও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটেও থাকছে তার দল।

বিএনপির সাবেক এই জ্যেষ্ঠ নেতা দেড় দশক আগে এলডিপি নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন। প্রথমে আওয়ামী লীগের জোটে তারা গেলেও পরে পথ পরিবর্তন করে বিএনপির জোটে যোগ দিয়ে এখনও রয়েছে।

আপনারা ২০ দলীয় জোটে থাকবেন কি না- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘জাতীয় মুক্তিমঞ্চ কোনো জোট নয়। আমরা ২০ দলীয় জোটে আছি এবং থাকব।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি বলেন, ‘২০ দলীয় জোটের মূল দল বিএনপি। তারা তো ওই জোটে থেকেই ড. কামাল হোসেনের সাথে (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) কাজ করছেন।’

এই মঞ্চ নিয়ে বিএনপিরও আপত্তি থাকার কারণ নেই বলে মনে করেন অলি।

তিনি বলেন, ‘১৩ মে ২০ দলীয় ঐক্যজোটের মিটিংয়ে বিএনপির নজরুল ইসলাম খান পরিষ্কারভাবে বলেছেন, আপনারা যে যেভাবে পারেন, বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য নিজ নিজ মঞ্চ থেকে আন্দোলন শুরু করেন। আমরা আজকে নয়, বেগম জিয়া জেলে যাওয়ার পর থেকে এলডিপি বহুবার তার মুক্তির জন্য সভা-সমাবেশ করেছে। আজকে যারা আমার দুই পাশে আছেন, তারা অনেকে আমার সাথে ছিলেন। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তি, চেতনার পক্ষের শক্তি এবং জাতিকে মুক্ত করতে জাতীয় মুক্তি মঞ্চে থাকতে চায়।’

জাতীয় মুক্তিমঞ্চ থেকে নির্দলীয় নিরপক্ষে সরকারের অধীনে পুনরায় সংসদ নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১৮ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

‘আমরা আমাদের ১৮ দফা নিয়ে জনগণের কাছে যাব। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমাদের এই জাতীয় মুক্তিমঞ্চ কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবে না, কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কাউকে আমরা সাহায্য করব না, লিপ্তও হবে না’- অলি আহমদ বলেন।

‘আমরা আশা করি, বিরোধী দলসমূহ এবং বিবেকবান ব্যক্তিগণ দলে দলে জাতীয় মুক্তি মঞ্চে যোগদান করে জাতিকে মুক্তি এবং সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করার লক্ষ্যে এগিয়ে আসবেন।’

মঞ্চের ১৮ দফায় রয়েছে- অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি, শেয়ারবাজার লুটপাট, অর্থ পাচারসহ দুর্নীতি রোধে সুপ্রিম কোর্টের নেতৃত্বে এক বা একাধিক জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার নেতা-কর্মীদের আইনি সহায়তা প্রদানে লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন, খাদ্যে ভেজাল রোধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান সম্বলিত নতুন আইন প্রণয়ন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল ও বন্ধ মিডিয়া খুলে দেওয়া, রাজনৈতিক দলের জন্য সংবিধান অনুযায়ী সমান সুযোগ সৃষ্টি করা, দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করতে তার আইনের সংশোধনী আনা ইত্যাদি।

সংবাদ সম্মেলনে কল্যাণ পার্টির সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপা সভানেত্রী তাসমিয়া প্রধান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের একাংশের যুগ্ম হাসচিব মাওলানা আহমেদ আলী কাশেমী, ন্যাশনাল মুভমেন্টের সভাপতি মুহিব খান এবং এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: