প্রিয় শিক্ষকের দোয়া নিলেন তথ্যমন্ত্রী

চট্টগ্রামের সরকারি মুসলিম হাইস্কুলের ছাত্র ছিলেন বর্তমান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ১৯৭৮ সালে এই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি।

সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন মোহাম্মদ ইসহাক। শিক্ষক ইসহাকের বয়স এখন ৮০ বছর। এই শিক্ষক ১৯৯৪ সালে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে অবসর নেন।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় শৈশবের স্মৃতিজড়ানো বিদ্যাপীঠ মুসলিম হাইস্কুলের ইংরেজির শিক্ষক মোহাম্মদ ইসহাককে তার বায়েজিদের বাসায় দেখতে যান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এ সময় একই ব্যাচের শিক্ষার্থী জামাল নাসের চৌধুরী ও এস এম ইলিয়াছ দুলালও তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

হাছান মাহমুদ বর্তমান সরকারের তথ্যমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৬৫ থেকে ৯৪ সাল পর্যন্ত মুসলিম হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেছেন মোহাম্মদ ইসহাক। সর্বশেষ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থেকে অবসর নেন তিনি।

হাছান মাহমুদের কাছে শিক্ষক মোহাম্মদ ইসহাক জানতে চান, ‘তোমার সন্তান কয়জন?’ মন্ত্রী জবাব দেন, ‘আমার এক ছেলে, দুই মেয়ে। ছেলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে। মেয়ে এ-লেভেলে পড়ছে।’ বলতেই শিক্ষক বলে ওঠেন, ‘দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ভালো। চট্টগ্রামে সবচেয়ে ভালো স্কুল হচ্ছে তিনটি—মুসলিম হাই, কলেজিয়েট ও খাস্তগীর।’

তথ্যমন্ত্রী জানতে চান, এখন মুসলিম হাইস্কুলে পড়াশোনার মান কেমন? শিক্ষক ইসহাক বলেন, ‘খুবই ভালো। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়—এর মধ্যে থাকেই।’

শিক্ষক ইসহাক তথ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘উদারতার কোনো বিকল্প নেই। আকাশসম উদারতা দেখাতে হবে।’

মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স করেছি, আবার বৈরুতে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকেও ইংরেজিতে এমএ করেছি, এরপর শিক্ষকতায় এসেছি।’ এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলে ওঠেন, ‘স্যারের যোগ্যতা এত বেশি যে শিক্ষকতায় না এলে পাকিস্তানের সচিব হতেন।’

মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, ‘আমি তো সেখানে (প্রশাসনের কর্মকর্তা) যাব না বলে আগে থেকেই ঠিক করেছিলাম।’

স্মৃতিচারণা করে তথ্যমন্ত্রী জানতে চান, ‘স্যার আগে সাইকেল চালাতেন, এখনো কি চালান ?’ জবাবে বলেন, ‘অনেক দিন ধরে চালাই না।’

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘স্কুলজীবনে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় আপনি স্যার একবার আমার বাবাকে অভিযোগ দিয়ে বলেছিলেন, আমি পড়ালেখার চেয়ে রাজনীতি নিয়ে ঘুরছি বেশি। এরপর বাবা আমাকে প্রচণ্ড পিটিয়েছিলেন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইসহাক স্যার সে সময় বাইসাইকেল নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিতেন। স্যারের মতো গুণী শিক্ষকেরা তাদের মেধা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে দেশে আলোকিত মানবসম্পদ উৎপাদনে অসামান্য অবদান রেখেছেন। স্যারের অসামান্য অবদান ভুলে যাওয়ার নয়। এ গুণী শিক্ষক তার সৃষ্টি ও কর্মের মধ্যে যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবেন। তাদের ত্যাগ আমাদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: