শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে দুই বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকে শাহাদাতের শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি বাংলাদেশ দলের প্রেসারকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জানা গেছে, খুলনায় জাতীয় লিগের শেষ রাউন্ডের ম্যাচ ছিল রোববার। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটিতে খুলনার বিপক্ষে ঢাকা বিভাগের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন শাহাদাত। সেখানেই বল ঘষে উজ্জ্বল করা নিয়ে ঝামেলা শুরু। ম্যাচ চলাকালীন সতীর্থ অফ স্পিনার আরাফাত সানি জুনিয়রকে বল ঘষে দিতে বলেন শাহাদাত। প্রথমে বল ঘষে দিতে অস্বীকৃতি জানান আরাফাত। এর পর হালকা কথা কাটাকাটি শুরু। শাহাদাতের কথায় উত্তর দেন আরাফাতও। এরপর প্রথমে চড়, পরে আরাফাতকে লাথি মারা শুরু করেন তিনি। আম্পায়ার এসে সরিয়ে দেয়ার পরও শাহাদাত আবার গিয়ে মারতে থাকেন। পরে সতীর্থরা তাকে একরকম জোর করেই নিয়ে যান মাঠের বাইরে।
এ ঘটনায় আচরণবিধির লেভেল ফোর অপরাধের দায়ে ম্যাচের শেষ দুদিন বহিষ্কার করা হয় শাহাদাতকে। মঙ্গলবার তাকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ৩ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
বিসিবির টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানিয়েছেন, শাহাদাতের অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় এনেই এই শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর আগেও শাহাদাতের শৃঙ্খলাভঙ্গের ইতিহাস ছিল, সেটাকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। মাঠের মধ্যে সতীর্থের গায়ে হাত তোলা, এটা তো গুরুতর অপরাধ। টেকনিক্যাল কমিটির সবাই তার এই শাস্তির ব্যাপারে একমত হয়েছে।
এই শাস্তি অন্য ক্রিকেটারদের জন্যও একটা দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেকোনো ক্রিকেটারের জন্যই এটা একটা খারাপ ব্যাপার যে, সে বারবার এরকম অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়াচ্ছে। শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না, এই বার্তাটা আমরা সবাইকে দিতে চাই।
এ ঘটনায় অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, আমি অনেক বড় ভুল করেছি। ওই কর্মকাণ্ডের জন্য আমি লজ্জিত, দুঃখিত। আমি অনুতপ্ত। আমার মাথা ঠিক ছিল না। এখন বুঝতে পারছি কাজটি ভালো হয়নি।
তিরি বলেন, আমি বিসিবিতে গিয়ে নিজের ভুল স্বীকার করব। কৃতকর্মের জন্য বোর্ডের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুতাপ ও দুঃখ প্রকাশ করব।
এর আগেও শৃঙ্খলাজনিত কারণে বেশ কয়েকবার শাস্তির মুখোমুখি হন শাহাদাত হোসেন। দেশের ক্রিকেটে ‘ব্যাড বয়’ হিসেবে পরিচিত এই ডানহাতি পেসারকে এর আগে নিজ বাসার শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের দায়ে জেলে যেতে হয়েছিল। একই মামলায় জেলে ছিলেন তার স্ত্রীও। জেলে যাওয়ার কারণে ওই সময়ে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে তাকে নিষিদ্ধ করেছিল বিসিবি। পরে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জীবিকার কথা ভেবে আবার ক্রিকেটে ফেরার অনুমতি দিয়েছিল বিসিবি।
সর্বশেষ ২০১৫ সালে জাতীয় দলে খেলা এই ক্রিকেটার বাংলাদেশের হয়ে ৩৮ টেস্ট, ৫১ ওয়ানডে ও ছয়টি টি২০ খেলেছেন।
টাইমস/এইচইউ