কারুকার্যমণ্ডিত জমিদার লক্ষণ সাহার বাড়ি

জমিদার লক্ষণ সাহার বাড়ি। চারদিকে সবুজ বেষ্টনীর মাঝে এক টুকরো স্বর্ণ মহলই বলা চলে। কাছ থেকে এই বাড়ির কারুকাজ দেখলে যে কেউ বিস্মিত হন। এই মোহনীয় সৌন্দর্য দেখলেই বুঝা যায় সেই সময়ের জমিদাররা কতটা বিলাসী আর আরাম প্রিয় ছিলেন। নিপুণ কারুকার্যমণ্ডিত জমিদার লক্ষণ সাহার বাড়িটি শত বছর পরও ঐতিহ্যপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসু পর্যটককে মুগ্ধ করে।

কর্মব্যস্ত নগর জীবনে যারা হাঁপিয়ে উঠেছেন, তারা ছুটির দিনে একদিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন ঢাকার খুব কাছেই নরসিংদীর লক্ষণ সাহার পুরনো এই জমিদারবাড়ি থেকে। পরিবার বন্ধুবান্ধবসহ কাটিয়ে আসতে পারেন প্রাচীন ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সঙ্গে। বাড়িটি জেলার পলাশ উপজেলার ডাংগা বাজারের কাছেই অবস্থিত। বাড়িটি বর্তমানে উকিলের বাড়ি নামেও পরিচিত।

নিপুণ কারুকার্যমণ্ডিত এই বাড়ির নির্মাতা জমিদার লক্ষণ সাহা ছিলেন মূলত প্রধান জমিদারের অধীনস্থ একজন সাব-জমিদার। লক্ষণ সাহার ৩ ছেলের নাম পেরিমোহন সাহা, নিকুঞ্জ সাহা ও বঙ্কু সাহা। দেশ ভাগের সময় বঙ্কু সাহা ভারতে চলে যান এবং ১৯৭১ সালের পূর্বে নিকুঞ্জ সাহাও ভারতে পাড়ি জমান।

একমাত্র পেরিমোহন সাহা এখানে থেকে যান। পেরিমোহন সাহার একমাত্র ছেলে বৌদ্ধ নারায়ণ সাহা আহম্মদ আলী নামের একজন উকিলের কাছে বাড়িটি বিক্রি করে দেন। এ কারণে লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়িটি এই অঞ্চলে উকিলের বাড়ি নামে অধিক পরিচিত।

জমিদার লক্ষণ সাহার বাড়ির কাছেই রয়েছে আরও একটি কারুকার্যময় পুরনো বাড়ি। বাড়িটিকে সবাই সুদান সাহার বাড়ি হিসেবে চেনে ও জানে। সুদান সাহার বাড়িও অনেক দৃষ্টিনন্দন ও কারুকার্যময়। সুদান সাহার বাড়িটি যে কেউ দেখলে মুগ্ধ হবে। এ বাড়ির সামনেও রয়েছে পুকুর, শানবাঁধানো পুকুর ঘাট।

জমিদার লক্ষণ সাহার বাড়ি থেকে অল্প দূরে রয়েছে আরেকটি পুরনো বাড়ি। বাড়িটিকে সবাই কুণ্ডু সাহার বাড়ি হিসেবে চিনে, যেটি বর্তমানে পরিত্যক্ত, কিন্তু আয়তনে জমিদার লক্ষণ সাহার এবং সুদান সাহার বাড়ি অপেক্ষায় অনেক বড়। কুণ্ডু সাহার বাড়িতে বর্তমানে কেউ বসবাস করে না।



কিভাবে যাবেন লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ি
ঢাকার গুলিস্তান সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্সের সামনে নরসিংদীগামী মেঘালয় বাস কাউন্টার রয়েছে। মেঘালয় বাসে করে পাঁচদোনা মোড় নামতে হবে, ভাড়া নেবে ৯০ টাকা। পাঁচদোনা মোড় থেকে থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে ডাঙ্গা বাজারের যেতে হবে, ভাড়া ২০ টাকা। সেখান থেকে হেঁটে বা ২০ টাকা রিকশা ভাড়ায় জমিদার লক্ষণ সাহার বাড়িতে যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে লক্ষণ সাহার বাড়িতে এক দিনে খুব সুন্দরভাবে সহজেই ঘুরে আসা যায়।

এছাড়া ঢাকার বনানী, মহাখালী কিংবা উত্তরা থেকে লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়িতে যেতে কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে ৩০০ ফিট দিয়ে কাঞ্চন ব্রিজ অতিক্রম করে মায়ার বাড়ির মোড়ে নামতে হবে। সেখানে ডাংগা যাওয়ার অটোরিকশা পাওয়া যায়।

খাওয়া ও খরচ
ওখানে মোটামুটি মানের কয়েকটা ভালো রেস্টুরেন্ট রয়েছে। দুপুরের খাওয়া বাবদ খরচ হবে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা। সব মিলিয়ে ৫০০-৬০০ টাকায় ভালোভাবেই ঘুরে আসা সম্ভব।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
উপজেলা নির্বাচনকালে আ.লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ : কাদের Apr 20, 2024
img
যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন : ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪০৭ Apr 20, 2024
img
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা Apr 20, 2024
img
মালয়েশিয়ায় শোষণের শিকার বাংলাদেশি শ্রমিকরা : জাতিসংঘ Apr 20, 2024
img
শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক ডিপজল Apr 20, 2024
img
তীব্র তাপপ্রবাহ : প্রাথমিক স্কুলে অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার নির্দেশ Apr 20, 2024
img
সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি Apr 19, 2024
img
বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীদের তালিকায় আলিয়া Apr 19, 2024
img
পালিয়ে আসা ২৮৫ জনকে ফেরত নিচ্ছে মিয়ানমার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী Apr 19, 2024
img
গ্রেপ্তারি পরোয়ানার শঙ্কায় নেতানিয়াহু, ইসরায়েলে জরুরি বৈঠক Apr 19, 2024