‘মিনি কক্সবাজার’ খ্যাত নোয়াখালীর মুছাপুর ক্লোজার

সবুজ শ্যামল প্রকৃতি, নিবিড় বন, গ্রামীণ পরিবেশ, পাখির কোলাহল, বন্যপ্রাণি, ফেনী নদীর ওপর নির্মিত ক্লোজার, ২৩ ভেন্ট রেগুলেটর, মৎস্যজীবী মানুষ উচ্ছ্বাস আর নদীর ছল ছল বিশাল জলরাশি নিয়ে এক অন্য রকম আবহ তৈরি করেছে মুছাপুর ক্লোজার। পানির ছল ছল শব্দ আর বিশাল আকাশের নিচে অবারিত নির্মল বাতাস আর সবুজ বনানী আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকবে।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নে বঙ্গোপসাগরের কুল ঘেঁষে ফেনী নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এই ক্লোজার। প্রথম দেখাতে মনে হবে সৈকত। কিছুক্ষণ পরে ভুল ভাঙবে। খুঁজে পাবেন নদীপাড়ে সাগরের আবহ। দেখতে সমুদ্র সৈকতের মত এই নদীপাড় স্থানীয়দের কাছে ‘মিনি কক্সবাজার’ হিসেবেও পরিচিত। প্রতিদিনই অসংখ্য দর্শনার্থী এই ক্লোজারের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে আসে।

মুছাপুরের ফেনী নদীর তীরে ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এই ক্লোজার। ২০০৯ সাল থেকে কয়েক দফা বাজেট বরাদ্দ দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের চেষ্টায় ক্লোজারটি নির্মাণ করা হয়।

১৯৬৯ সালে এখানে বনবিভাগ বনায়ন শুরু করে। মুছাপুর ক্লোজার এলাকায় চরের মধ্যে দক্ষিণ মুছাপুর মৌজায় ৮২১.৫৭ একর, চরবালুয়া (দিয়ারা) মৌজায় ১৮৬১.১০ একর ও চরবালুয়া মৌজায় ৬০০.১৫ একর সর্বমোট ৩২০০.৮২একর বনবিভাগের জমি জুড়ে এই বনাঞ্চল।

এখানকার বাগানে ঝাউ, কেওড়া, পিটালী, খেজুর, লতাবল, গেওয়া, শনবলই, বাবুলনাটাই, আকাশমনিসহ বিভিন্ন ছোট প্রজাতির গাছও রয়েছে। রয়েছে শিয়াল, বন বিড়াল, সাপসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। শীতের মৌসুমে সাইবেরিয়া থেকে আসা অতিথি পাখিদেরও দেখা যায় এখানে।

বনের সরু রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে একটু ভেতরে প্রবেশ করলে পাবেন শীতল ছায়া ও কোথাও কোথাও বিশাল খোলা জায়গা। তার পাশেই দেখা যাবে দিগন্তজোড়া সৈকতের অপার মাধুর্য।

এখানে চারপাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বিভিন্ন রকমের বনজ গাছ। বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কোলাহল, বিশাল সমুদ্র সৈকত। সূর্যোদয় সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্যের সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। রয়েছে ট্রলারে কিংবা স্পিডবোটে করে চরে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ।

যাওয়ার উপায়:

ঢাকা থেকে নোয়াখালী যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি বাস রয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

১। একুশে পরিবহন (০১৬৭৮০৪৭৩৮২), মিরপুর ও সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে যায়।

২। বিলাস পরিবহন (০১৭১২৬৯৩৮৩৬), সায়েদাবাদ কাউন্টার

৩। শাহী পরিবহন (০১৯১৩৬২৮০৩৮), সায়েদাবাদ ও জিগাতলা থেকে ছেড়ে যায়।

নোয়াখালী জেলা শহর থেকে যে কোনো গাড়িতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বসুরহাট বাজারে চলে আসতে হবে। বসুরহাট থেকে যাতায়াতে মুছাপুর ক্লোজার পর্যন্ত দুই-তিনটি পাকা সড়ক রয়েছে। ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলা হয়েও আসতে পারেন।

যেখানে থাকবেন:

থাকার জন্য নোয়াখালী শহরে আসতে হবে। নোয়াখালীতে ভালো থাকার জায়গা হলো - সার্কিট হাউস, রয়েল হোটেল, টাউন হল, হোটেল রাফসান, পুরাতন বাসষ্ট্যান্ডের হোটেল লিটন, হসপিটাল রোডে অবস্থিত নোয়াখালী গেস্ট হাউস।

এছাড়াও রয়েছে পুবালি হোটেল (০৩২১-৬১২৫৭), হোটেল আল মোরশেদ (০৩২১-৬২১৭৩), হোটেল রাফসান (০৩২১-৬১৩৯৫)।

 

টাইমস/এইচইউ/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
উপজেলা নির্বাচনকালে আ.লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ : কাদের Apr 20, 2024
img
যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন : ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪০৭ Apr 20, 2024
img
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা Apr 20, 2024
img
মালয়েশিয়ায় শোষণের শিকার বাংলাদেশি শ্রমিকরা : জাতিসংঘ Apr 20, 2024
img
শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক ডিপজল Apr 20, 2024
img
তীব্র তাপপ্রবাহ : প্রাথমিক স্কুলে অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার নির্দেশ Apr 20, 2024
img
সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি Apr 19, 2024
img
বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীদের তালিকায় আলিয়া Apr 19, 2024
img
পালিয়ে আসা ২৮৫ জনকে ফেরত নিচ্ছে মিয়ানমার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী Apr 19, 2024
img
গ্রেপ্তারি পরোয়ানার শঙ্কায় নেতানিয়াহু, ইসরায়েলে জরুরি বৈঠক Apr 19, 2024