স্ট্রিমিং দুনিয়ায় যেন নতুন এক যুদ্ধ শুরু হয়েছে—মানুষ বনাম যন্ত্রের। সাম্প্রতিক সময়ে জিও হটস্টারে মুক্তি পাওয়া সম্পূর্ণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় নির্মিত ধারাবাহিক মহাভারত: এক ধর্মযুদ্ধ দর্শকের কৌতূহল জাগালেও দ্রুতই সমালোচনার ঝড় তোলে। গল্পহীন সংলাপ, প্রাণহীন মুখাবয়ব আর নিস্তেজ আবেগ—সব মিলিয়ে দর্শকরা বলছেন, এই সিরিজে নেই মানুষের ছোঁয়া, নেই শিল্পের আত্মা। প্রযুক্তির দক্ষতা যতই থাকুক, তার ভেতর যে হৃদয়ের স্পন্দন থাকে না, সেটাই যেন আবারও প্রমাণ করল এই প্রযোজনা।
তবে এই নির্জীবতার ভিড়ে এক নতুন আশার আলো দেখছেন দর্শক ও নির্মাতারা—মানবসৃষ্ট অ্যানিমেশনের নবজাগরণ। ইতিমধ্যে আলোচনায় এসেছে বাহুবলি: দ্য ইটার্নাল ওয়ার। ২০২৭ সালে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা এই অ্যানিমেটেড মহাকাব্যটি নির্মাণ করছে বাহুবলিরই প্রযোজক দল। হাতে আঁকা দৃশ্য, চলচ্চিত্রের মতো গাঢ় আবহ আর প্রাণময় গল্প—সব মিলিয়ে ইতিমধ্যেই এটি দর্শকদের মধ্যে প্রত্যাশার ঢেউ তুলেছে।
ভারতের অ্যানিমেশন শিল্পের এই নবপথচলা মনে করিয়ে দিচ্ছে, শিল্প শুধু উৎপাদন নয়, এটি এক অনুভব। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যতই নিখুঁত ছবি আঁকুক, তবুও অসম্পূর্ণ মানবসৃষ্ট শিল্পই মানুষের মনে বেশি ছোঁয়া দেয়। যেমন কুরুক্ষেত্র–এর মতো অ্যানিমেশনগুলো দর্শককে ভাবায়, কাঁদায়, স্পর্শ করে।
এখন অনেক প্রযোজনা সংস্থা, বিশেষ করে ম্যাডক ফিল্মস, নতুন দিকের সন্ধান করছে—যন্ত্রের চেয়ে মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে, আবেগকেই রাখছে কেন্দ্রবিন্দুতে। মহাভতার নৃসিংহসহ আরও কিছু মানবনির্ভর প্রকল্প ইতিমধ্যেই নির্মাণাধীন।
যে সময়টিতে অ্যালগরিদমে তৈরি দৃশ্য ও সংলাপে ভরে গেছে পর্দা, সেই সময়েই বাহুবলি: দ্য ইটার্নাল ওয়ার যেন এক সাহসী ঘোষণা—বাস্তব গল্প মানুষই বলে, কোড নয়।
ইএ/এসএন