ভারতের অস্কারজয়ী সংগীতগুরু এ আর রহমান। বাবার পথ ধরে তার মেয়ে খাতিজা রহমানও গানের ভুবনে পা রেখেছেন। তিনিও ভারতীয় সংগীতজগতে এক অনন্য নাম। প্রতিভা, স্বকীয়তা ও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের সমন্বয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন নিজের আলাদা পরিচিতি।
কিন্তু সবকিছুর মাঝে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো, তিনি গান করলেও প্রকাশ্যে কখনো মুখ দেখান না। সম্পূর্ণ পর্দানশীন জীবনযাপন করেই এগিয়ে নিয়ে চলেছেন নিজের সংগীত ক্যারিয়ার।
১৯৯৬ সালের ২৮ জুলাই চেন্নাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন খাতিজা। তার বাবা সংগীতশিল্পী হওয়ায় সংগীতের আবহে বেড়ে উঠেছেন মেয়ে। এ কারণে একাডেমিক পড়াশোনা শেষ করে সংগীতকে পেশা করে নেন খাতিজা।
মাত্র ১৪ বছর বয়সেই খাতিজার সংগীতজীবনের শুরু। রজনীকান্ত ও ঐশ্বরিয়া রাই অভিনীত সুপারহিট তামিল ছবি ‘এন্থিরান’-এর ‘পুথিয়া মানব’ গানে কণ্ঠ দিয়ে প্রথমবার শ্রোতাদের সামনে আসেন তিনি। গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেলেও খাতিজা তখনও আলোচনায় আসেননি তার লো-প্রোফাইল ব্যক্তিজীবনের কারণে।
এরপর পড়াশোনাকে অগ্রাধিকার দিতে দীর্ঘ সাত বছর বিরতি নেন তিনি। ২০১৯ সালে বিশ্বখ্যাত আইরিশ ব্যান্ড ‘ইউ-টু-র’ সঙ্গে ‘অহিংসা’ গানটিতে অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজের পরিচিতি পান।
২০২০ সালে প্রকাশ করেন তার প্রথম একক গান ‘ফেরেশতোন’। সেটি সমালোচকদের প্রশংসা কুড়ায়। এরপর থেকে নিয়মিতই বিভিন্ন ছবিতে কণ্ঠ দিয়ে আসছেন খাতিজা। তার কণ্ঠস্বর পাওয়া গেছে ‘মিমি’, ‘ইরাভিন নিঝাল’, ‘মিলি’, ‘পন্নিয়িন সেলভান: অংশ ২’সহ বেশ কয়েকটি বড় বাজেটের সিনেমার গানে।
২০২৩ সাল ছিল খাতিজার ক্যারিয়ারের একটি বড় মাইলফলক। ওই বছর প্রকাশ করেন তার প্রথম অ্যালবাম ‘কুহু কুহু’। মূলত এটি ছিল লতা মঙ্গেশকরের প্রতি তার শ্রদ্ধা নিবেদন। সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক নারী সংগীতদল ফিরদাউস অর্কেস্ট্রার সহযোগিতায় নির্মিত এই অ্যালবামটি সংগীতপ্রেমীদের মাঝে সাড়া ফেলে।
গান গাওয়ার পাশাপাশি সুরকার হিসেবেও নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন খাতিজা। ২০২৪ সালে তামিল সিনেমা ‘মিনমিনি’ দিয়ে সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।
নিজের ধর্মীয় ও ব্যক্তিগত মূল্যবোধে অটল থেকে পর্দার আড়ালে থেকেও যে আন্তর্জাতিক মানের কাজ করা যায়, খাতিজা রহমান তারই প্রমাণ।
ব্যক্তি জীবনে ২০২২ সালে তিনি ভালোবেসে বিয়ে করেছেন অডিও ইঞ্জিনিয়ার ও উদ্যোক্তা রিয়াসদীন শেখ মোহাম্মদকে।
কেএন/টিকে