খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে আউশের চার নতুন জাত

আউশ মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ ফলন দিয়েছে উচ্চ ফলনশীল স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন খরা সহিষ্ণু আউশ ধানের নতুন ৪টি জাত। জাতগুলো হেক্টর প্রতি বোরো মৌসুমের মতো ফলন দিতে সক্ষম। এ জাত ছড়িয়ে দিয়ে আউশ মৌসুমে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় ও কৃষি সম্প্রসারণের পদস্থ কর্মকর্তারা।

ব্রি, গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সাইদী রহমান বলেন, ‘আমরা গত মে মাসের ১ম সপ্তাহে আমাদের কার্যালয়ের গবেষণা মাঠে গোপালগঞ্জ ও আশপাশের জেলার জন্য উপযোগী বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত আউশের নতুন জাত ব্রি হাইব্রিড ধান-৭, ব্রি ধান-৪৮,ব্রি ধান-৮২ ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত বিনা ধান-১৯ এর পরীক্ষামূলক চাষ করি। গত ৮ আগস্ট গবেষণা মাঠ থেকে পাকা ধান কেটে পরিমাপ করে দেখা গেছে ২০২০ সালে উদ্ভাবিত আউশের একমাত্র হাইব্রিড ধান ব্রি হাইব্রিড ধান-৭ প্রতি হেক্টরে ৭.৩৮ টন, ব্রি ধান-৪৮ হেক্টর প্রতি ৬.১৬ টন, ব্রি ধান-৮২ হেক্টরে ৫.৬৬ টন ও বিনা ধান-১৯ হেক্টরে ৫.১২ টন ফলন দিয়েছে। প্রতিটি জাতই উদ্ভাবকদের প্রত্যাশার চেয়ে অন্তত দেড় টন পর্যন্ত বেশি ফলন দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বন্যার পানি সচরাচর আসেনা, এমন মাঝারি উঁচু ও মাঝারি নিচু জমিতে এ ধানের চাষ করা যায়। এছাড়া এ জাতের ধানে সেচ খরচ কম লাগে। এ ধানে রোগ বালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হয়। তাই বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন। খরা সহিষ্ণু এ ধান ১শ’ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে কাটা যায়। ধান হেলে পড়েনা। ধানের আকৃতি সরু, লম্বা ও ভাত ঝরঝরে। তাই বাজারে একটু বেশি দামে কৃষক এ ধান বিক্রি করে বাড়তি টাকা পাবেন।’

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দু কুমার রায় বলেন, ‘বোরো ধান কাটার পর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নতুন ৪ জাতের আউশ ধান আবাদ করা যায়। আউশের পর আগস্টে আমন ধান করা যায়। এক জমিতে কৃষক ৩ বার ধান ফলাতে পারেন। উচ্চ ফলনশীল আউশের আবাদ সম্প্রসারণ করে দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব।’

ব্রি, গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ড. আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘সরকার খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আউশ আবাদ সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আউশ মৌসুমের এ ৪টি জাতের আবাদ সম্প্রসারণ করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থাপনা করলে প্রতি হেক্টরে বোরো মৌসুমের মতো ফলন পাওয়া যাবে। সঠিক ব্যবস্থাপনায় বিশেষ করে ব্রি হাইব্রিড ধান-৭ ও ব্রি ধান-৪৮ এর ফলন বোরো মৌসুমের মতোই পাওয়া সম্ভব। আউশ মৌসুমে জাতীয় উৎপাদনের শতকরা ৯ থেকে ১০ ভাগ ধান উৎপাদিত হয়। এসব জাত সম্প্রসারণ করলে আউশ মৌসুমে ধানের জাতীয় উৎপাদন অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। এতে করে খাদ্য নিরাপত্তা ও এসডিজি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

 

টাইমস/এসই/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জাহাজসহ জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে সরকার অনেক দূর এগিয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী Mar 28, 2024
img
ঢাবির কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ফল প্রকাশ, ৮৯.৯৩ শতাংশ ফেল Mar 28, 2024
img
একনেকে ৮ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন Mar 28, 2024
img
রাজসিক সংবর্ধনায় দায়িত্ব নিলেন বিএসএমএমইউ'র নতুন উপাচার্য Mar 28, 2024
img
রোদে পোড়া ত্বকের যত্নে হলুদের ঘরোয়া প্যাক Mar 28, 2024
img
শহরের চেয়ে গ্রামে বিয়ে-তালাক বেশি Mar 28, 2024
img
ময়মনসিংহে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৫ Mar 28, 2024
img
বাংলাদেশে মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে সমর্থন অব্যাহত থাকবে: ম্যাথিউ মিলার Mar 28, 2024
img
নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত Mar 28, 2024
img
নিষেধাজ্ঞার ৩ দিনের মধ্যে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত Mar 27, 2024