যে ঘরে প্রতিদিন ছিল হাসি, রঙ আর প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর একজন মানুষ, সে ঘরই আজ নিঃসঙ্গ, স্তব্ধ। আচমকাই যেন থেমে গিয়েছে সবকিছু। বলিউড অভিনেত্রী শেফালী জরীওয়ালার আকস্মিক মৃত্যু সেই ঘরে কেবল নীরবতাই রেখে গিয়েছে। স্ত্রীর শূন্যতাকে মেনে নিতে পারছেন না অভিনেতা পরাগ ত্যাগী। সমাজমাধ্যম জুড়ে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তাঁদের যৌথ জীবনের মুহূর্তগুলো। বারবার লিখে চলেছেন তাঁর ‘পরি’র কথা।
গত ২৭ জুন রাতে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় শেফালীকে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বইয়ের কুপার হাসপাতালে। কিন্তু কিছুই করা যায়নি। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রাথমিকভাবে জানা যায়, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে ৪২ বছর বয়সী অভিনেত্রীর। তবে সেই মৃত্যু নিয়েই শুরু হয়েছে নানা প্রশ্ন, সন্দেহ, আলোচনার ঝড়। শুধু ভক্তরাই নন, গোটা বিনোদন দুনিয়াই হতবাক, এমন প্রাণবন্ত একজন মানুষের এমন পরিণতি নিয়ে।
মৃত্যুর পর প্রশ্ন উঠেছে একাধিক দিকে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা গিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেছেন তাঁদের বাড়িতে। চর্চায় এসেছে অভিনেত্রীর বয়স ধরে রাখতে ব্যবহৃত ওষুধও। যদিও চিকিৎসার রিপোর্ট কিংবা তদন্তে এখনও চূড়ান্ত কিছু জানানো হয়নি, তবে কটাক্ষ-সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছেন পরাগ ত্যাগী নিজেও।
এই কঠিন সময়েও পরাগ নিজের ভালোবাসার মানুষটির স্মৃতি আঁকড়ে ধরে রাখছেন। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে ভাগ করে নিয়েছেন একটি পুরনো ভিডিয়ো। সেখানে শেফালী মেতে উঠেছেন তাঁর বোনঝি আর্যা ও বোনপো কিয়ানের সঙ্গে খুনসুটিতে। কখনও ক্যামেরা ফিল্টার দিয়ে গোঁফ লাগানো মুখ, কখনও কান ধরার হাস্যকর চেষ্টা, আবার কখনও কোলের উপর মাথা রেখে আদর খাওয়া—সবটাই যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে সেই ভিডিয়োয়।
পরাগ সেই পোস্টে লিখেছেন, “পরি, বিশ্বের সেরা মাসি। আর্যা, কিয়ান তাদের মস্তিখোর মাসির সঙ্গে দারুণ সময় কাটাত।” শেফালী যে কেবল একজন ভালো অভিনেত্রীই ছিলেন না, বরং শিশুদের প্রতি ছিল তাঁর অসীম ভালোবাসা, সেটাও তুলে ধরেছেন পরাগ। তিনি জানিয়েছেন, “জীবনের প্রতিটি চরিত্রে পরি ছিল শ্রেষ্ঠ। শুধু ভালবাসা আর আনন্দই দিয়ে গিয়েছে।”
এই পোস্টের মাধ্যমে পরাগ বুঝিয়ে দিয়েছেন, আজ যাঁরা পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাঁর জীবনের সেই ‘পরি’র সঙ্গেই তাঁদের ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। তাই শুধুমাত্র তাঁদের সঙ্গেই এই স্মৃতির ভাগ তিনি করে নিতে চাইছেন।
বহু আলোচিত ‘কাঁটা লগা গার্ল’ শেফালীর এমন বিদায় যেন মানতেই পারছেন না ভক্তরা। পরাগের শোক, স্মৃতি আর সামাজিক বার্তা মিলিয়ে আরও একবার প্রমাণ হয়—একজন মানুষের অনুপস্থিতিও কতটা জীবন্ত হয়ে থাকতে পারে, ভালোবাসার ছায়ায়।