এটিএম শামসুজ্জামানের অবস্থা অপরিবর্তিত

বর্ষীয়ান অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। মঙ্গলবার বিকেল ৩টা থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। এর আগে, হঠাৎ অসুস্থতাবোধ করায় গত ২৬ এপ্রিল রাতে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এই অভিনেতাকে।

পরদিন সকালে তাকে স্যালাইন দেয়া হয়। তখন হঠাৎ করে তার মলত্যাগে জটিলতা দেখা দেয়। এ কারণে গত ২৭ এপ্রিল দুপুরে জরুরি ভিত্তিতে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। সেখানে সফলভাবে তার একটি অস্ত্রোপচার হয়। এরপর ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। পরে তার অবস্থা উন্নতির দিকে গেলে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।

এদিকে, লাইফ সাপোর্টে থাকা খ্যাতিমান অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের শারীরিক অবস্থা একদিন পরও অপরিবর্তিতই রয়েছে।

এই তথ্য জানিয়েছেন তার ছোট ভাই আলহাজ সালেহ জামান সেলিম।

তিনি ভাইয়ের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে গণমাধ্যমকে বলেন, আজ (বুধবার) দুপুরে চিকিৎসকদের সাথে মিটিং হয়েছে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত এসেছে আগামী তিনদিন এটিএম শামসুজ্জামানকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হবে। যদি এই সময়ের মধ্যে কোনো রেসপন্স না আসে অবস্থার উন্নতি না হয় তাহলে পরবর্তীতে ২১ দিনের জন্য লাইফ সাপোর্টে নেয়া হবে এই অভিনেতাকে। তবে তার সুস্থতার ব্যাপারে চিকিৎসকরা এখনো আশাবাদী। বাকিসব ওপরওয়ালার হাতে।

প্রসঙ্গত, গত পাঁচ দিন থেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এটিএম শামসুজ্জামান। শুক্রবার রাতে মলত্যাগে জটিলতা দেখা দিলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এই অভিনেতা। পরে সেই দিন থেকে এখনো হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন এটিএম শামসুজ্জামান। ৭৮ বছর বয়সী এ অভিনেতা বর্তমানে অধ্যাপক রাকিব উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।

এটিএম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। এটিএম শামসুজ্জামানের চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয় ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ ছবির সহকারী পরিচালক হিসেবে। এরপর তিনি প্রথম কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘জলছবি’ সিনেমার জন্য। এ পর্যন্ত শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনি লিখেছেন এটিএম শামসুজ্জামান।

এছাড়া কৌতুক অভিনেতা হিসেবে ১৯৬৫ সালের দিকে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন এটিএম শামসুজ্জামান। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে দারুণ আলোচনায় আসেন তিনি।

১৯৮৭ সালে কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দায়ী কে?’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান এটিএম শামসুজ্জামান। এরপর রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’তে অভিনয় করেন ও শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান এই অভিনেতা। ছবির পাশাপাশি এটিএম শামসুজ্জামান অভিনয় করেছেন অসংখ্য নাটকে। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক।

 

টাইমস/জেকে/জেডটি

Share this news on:

সর্বশেষ