বুক জ্বালা-পোড়া নিয়ন্ত্রণের প্রাকৃতিক উপায়

আপনি কি বুক জ্বালা-পোড়া বা অ্যাসিডিটি সমস্যায় ভুগছেন? অল্প একটু খাবার খাওয়ার পর পেট ভরা ভরা লাগছে? অথবা খাওয়ার পর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হচ্ছে? তাহলে আর ওষুধ খাবেন না। কারণ ওষুধ আপনাকে রোগ থেকে সাময়িক মুক্তি দেবে। তাছাড়া ওষুধে বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও থাকতে পারে। তাই এখন থেকে আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে এ সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করুন। এজন্য চিকিৎসকরা কিছু কাজ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন-

প্রতিদিন সকালে পানি পান করুন
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর একগ্লাস উষ্ণ পানি পান করুন। পানি কক্ষতাপমাত্রার কিংবা কুসুম গরম হলে ভাল হয়। কখনো চা, কফি, জুস কিংবা ঠান্ডা পানি পান করবেন না।

প্রতিদিন একটি ব্যায়াম করুন
দুই পা বরাবর রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ান এবং দুই হাতের কনুই বাঁকা করে হাতে হাত রেখে বুকের সঙ্গে স্পর্শ করে রাখুন। এবার পায়ের আঙ্গুলের উপর ভর করে যততুকু সম্ভব উপরে উঠুন; আবার নীচে নামুন। এভাবে একসঙ্গে ১০ বার উঠা-নামা করুন। অতঃপর দাঁড়িয়ে থেকে ১৫ সেকেন্ড সময় পর্যন্ত ছোট ছোট করে দ্রুত শ্বাস নিন। নিয়মিত এই ব্যায়ামটি করলে দেখবেন আপনার অ্যাসিডিটি সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।

আঁদার গুড়া খাবেন
আপনার গ্যাস্ট্রিক কিংবা অ্যাসিডিটি সমস্যার ক্ষেত্রে যেকোন প্রকার ওষুধের তুলনায় আঁদা একটি কার্যকর সমাধান। প্রতিদিন এক চা চামচ কাঁচা আঁদার গুড়া খাবেন। আর যদি বাজারে এটা পাওয়া না যায়, তবে প্রতিদিন ১ গ্রাম কাঁচা আঁদা নিয়ে গুড়া করে ক্যাপসুল বানিয়ে খাবেন।

লবণ কম খাবেন
নরওয়ের গবেষকরা দেখেছেন যে, যারা প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে লবণ ব্যবহার করেন, তাদের অ্যাসিড রিফ্লাক্স সমস্যার ঝুঁকি দ্বিগুণ। তাই লবণ কম খাবেন। আর কম লবণের কারণে খাবার সুস্বাদু না হলে সম্পূরক হিসেবে আপনি অন্যান্য মসলা কিংবা প্রাকৃতিক ভিনেগার যোগ করতে পারেন।

চুইংগাম চিবানো
যখন অ্যাসিডিটি সমস্যা অনুভুব করবেন তখন কিছু চুইংগাম চিবাতে থাকেন। কারণ চুইংগাম চিবালে মুখ নিঃসৃত লালা ১৪০ ভাগ বৃদ্ধি পায়। মুখের লালায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা খাদ্যনালীর সুরক্ষা দেয়। তাই চুইংগাম চিবানো অ্যাসিড রিফ্লাক্স সমস্যার সমাধানে কাজ করে।

লিকোরাইস
আলসার সমস্যার একটি প্রাকৃতিক সমাধান হল ডিগ্লাইক্রিজিনেটেড লিকোরাইস রুট বা ডিজিএল। এটা অ্যাসিড রিফ্লাক্স সমস্যার সমাধান করে। প্রতিদিন তিন বেলা খাবারের পূর্বে ২০ মিনিট দুইটি ডিজিএল ট্যাবলেট চুষে খান। এটা মুখ নিঃসৃত লালা বৃদ্ধি করবে, যা অ্যাসিড রিফ্লাক্স সমস্যার সমাধান করবে।

প্রোবায়োটিক
গবেষণায় দেখা গেছে যে, অ্যাসিড রিফ্লাক্স ও গ্যাস্ট্রিকসহ অসংখ্য সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসায় কাজ করে প্রোবায়োটিক। গাঁজনকৃত শাকসবজি, দুগ্ধজাত খাবার যেমন- দই, ইয়োগার্ট, পনির, ছানা, গাঁজনকৃত সয়াজাতীয় পণ্য ইত্যাদি প্রোবায়োটিক হিসেবে বাজারে পাওয়া যায়।

লেবুর নির্যাস
লেবু বা এ জাতীয় ফলের নির্যাস পাকস্থলী ও খাদ্যনালীতে সুরক্ষামূলক আবরণ তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে লেবুজাতীয় ফলের নির্যাস অ্যাসিড রিফ্লাক্স সমস্যারও সমাধান করে। একদিন পর পর একটানা বিশ দিন খালি পেটে (খাওয়ার আধাঘণ্টা আগে বা এক ঘণ্টা পরে) এক গ্রাম নির্যাস খেতে হবে। দেখা যায়, এটা দুই সপ্তাহের মধ্যে ৯০ ভাগ বুক জ্বালা-পোড়া সমস্যার সমাধান করে। প্রতি কোর্স থেকে আপনি অন্তত ছয় মাসের জন্য নিরাপদ হয়ে যেতে পারেন।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: