গর্ভ নষ্ট হওয়ার জন্য কে দায়ী ?

গর্ভধারণের পর বিভিন্ন কারণে গর্ভ নষ্ট হয়ে যায়। যা সন্তান প্রত্যাশী বাবা-মার জন্য খুবই বেদনাদায়ক। কিন্তু এর জন্য কে দায়ী? পুরুষ না নারী?

আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বললে এই প্রশ্নের উত্তরটা খুব সহজ। আর তা হলো- নারী। গর্ভের সন্তান নষ্ট হলে আমরা খুব সাধারণভাবেই নারীদের দায়ী করি। আমাদের ধারণা নারীর ভুলত্রুটি ও অসতর্কভাবে চলাফেরা করার জন্যই তার গর্ভ ছুটে যায়।

অনেক ক্ষেত্রে আমাদের এ ধারণা সত্য। কিন্তু সবসময় কি কেবল নারীদের কারণেই এটা হয়ে থাকে? নাকি এর পেছনে পুরুষদের কোনো অবদান থাকতে পারে? হ্যাঁ, গবেষণা বলছে শুধু নারীর অসাবধানতার কারণেই নয়, পুরুষের শুক্রাণুর ত্রুটির কারণেও নারীর গর্ভ নষ্ট হতে পারে। সম্প্রতি ক্লিনিক্যাল কেমিস্ট্রি জার্নালে প্রকাশিত লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের একটি গবেষণায় এসব তথ্য ওঠে এসেছে।

গবেষণায় স্ত্রীদের একাধারে তিন বা তার বেশিবার গর্ভ নষ্ট হয়েছে এমন ৫০ জন পুরুষের শুক্রাণুর সঙ্গে স্ত্রীরা সুস্থভাবে সন্তান জন্ম দিয়েছেন এমন ৬০ জন পুরুষের শুক্রাণুর তুলনা করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, যাদের স্ত্রীদের বার বার গর্ভ নষ্ট হয়েছে তাদের শুক্রাণু অন্যদের থেকে দুই গুণ ত্রুটিপূর্ণ।

ইম্পেরিয়াল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান গবেষক ড. চান্না জয়সেনা বলেন, মায়ের গর্ভ নষ্ট হলে চিকিৎসকরা সাধারণত নারীদের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার দিকে বেশি নজর দেন। কিন্তু এই গবেষণা থেকে প্রমাণ হচ্ছে যে, পুরুষের শুক্রাণুর স্বাস্থ্য থেকেও গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্য প্রভাবিত হতে পারে।

তিনি বলেন, এর আগেও কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, গর্ভপত্রের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পুরুষের শুক্রাণু যা মানব ভ্রূণে অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ করে।

গবেষণা দল মনে করেন, রিঅ্যাক্টিভ অক্সিজেন স্পেসিস নামে পরিচিত মলিকিউলসের কারণে পুরুষের শুক্রাণুতে ত্রুটি দেখা দিতে পারে। যেখানে এই গবেষণায় দেখা গেছে, স্ত্রীদের বার বার গর্ভ নষ্ট হয়েছে এমন পুরুষদের রিঅ্যাক্টিভ অক্সিজেন স্পেসিস অন্যদের থেকে চার গুণ বেশি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন পুরুষের দেহে উপকারি মলিকিউলসের পরিমাণ বাড়ানোর কৌশল খুঁজতে গবেষণা করছেন এই গবেষণা দল। যা ক্ষতিকর রিঅ্যাক্টিভ অক্সিজেন স্পেসিসের নিয়ন্ত্রণ করবে এবং গর্ভের সুরক্ষা দেবে।

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on: