বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ডায়াবেটিস এখন একটি মহামারি রোগ। এই রোগের অত্যধিক বিস্তারের কারণেই সম্প্রতি এমন ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সারা বিশ্বে এর কারণে প্রতি বছর ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। অথচ মহামারি এই ডায়াবেটিস নিরাময়ে এখনও কার্যকর কোনো ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। তবে সম্প্রতি একটি গবেষণা থেকে ডায়াবেটিস নিরাময়ের কৌশল সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যা ডায়াবেটিস রোগীদেরকে নতুন করে আশার বাণী।
আমেরিকার সেন্ট লুসিয়ায় অবস্থিত ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অব মেডিসিনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মানবদেহেরে স্টেম কোষকে ইনসুলিন ক্ষরণকারী বিটা কোষে রূপান্তরিত করা যাবে। রূপান্তরিত বিটা কোষ রক্তে গ্লুকোজের ওঠা-নামা নিয়ন্ত্রণ করতে ভূমিকা রাখবে। সম্প্রতি ‘স্টেম সেল রিপোর্টস’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে এসেছে।
গবেষণাকালে গবেষকরা মানবদেহের স্টেম কোষ থেকে কিছু বিটা কোষ তৈরি করেছেন। রূপান্তরের সময় বিভিন্ন উপাদানের সাহায্যে বিটা কোষগুলোকে ব্যাপক পরিবর্তন করা হয়, যাতে এগুলো যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন নিঃসরণ করতে পারে। এরপর বিটা কোষগুলোকে পরীক্ষামূলকভাবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কিছু ইঁদুরের দেহে প্রয়োগ করা হয়।
এই রূপান্তরিত কোষ একটি কার্যকর মাত্রায় ইনসুলিন উৎপাদন করেছে, যা ইঁদুরগুলোর রক্তের গ্লুকোজের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রিত রেখেছে। ফলে বেশ কয়েকমাস ধরে ইঁদুরগুলো ডায়াবেটিস থেকে সুস্থ ছিল।
গবেষণাদলের প্রধান ড. জে আর মিলম্যান বলেন, এর আগেও কিছু গবেষণায় এ ধরণের বিটা কোষের উদ্ভাবন করা হয়েছিল। কিন্তু এগুলো খুব একটা উপযোগী ছিল না। কারণ এগুলো হয় অতিরিক্ত মাত্রায় ইনসুলিন তৈরি করত কিংবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে একেবারেই ইনসুলিন তৈরি করত না।
তবে এ ধরণের রূপান্তরিত বিটা কোষ কখন মানবদেহে প্রয়োগ করা সম্ভব হবে সে বিষয়ে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করেননি গবেষকরা। তবে এগুলো মানবদেহে প্রয়োগের অন্তত দুটি উপায় আছে বলে তারা মন্তব্য করেছেন।
টাইমস/এএইচ/জিএস