স্মৃতিশক্তি উন্নত করে ব্যায়াম

নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে দেহে যে হরমোন নিঃসৃত হয় তা মস্তিষ্কের মারাত্মক রোগ আলঝেইমার্স প্রতিরোধ ও স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, শারীরিক ব্যায়াম করার সময় মানব দেহে ইরিসিন নামক বিশেষ এক ধরণের হরমোন উৎপন্ন হয়। এটা প্রধানত দেহে শক্তির উৎস হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

নেচার সাইন্স জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ইরিসিন নামক এই হরমোনটি মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস নামক অঞ্চলের স্নায়ুর বৃদ্ধি ও বিকাশ করে। হিপোক্যাম্পাস মস্তিষ্কের এমন একটি অঞ্চল, যা শিখন ও স্মৃতিশক্তির সঙ্গে জড়িত।

যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অটাভিও আরানসিও বলেন, ‘গবেষণার এই ফলাফল প্রমাণ করে যে নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও অনুশীলনের ফলে মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি উন্নত হয়, যা আলঝেইমার্সসহ বিভিন্ন ধরনের মস্তিষ্কের রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।’

আরানসিও, ব্রাজিলের ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অব রিও দে-জেনেইরো ও কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের এই গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস অঞ্চলে ইরিসিন হরমোনের অস্তিত্ব রয়েছে এবং আলঝেইমার্স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হিপোক্যাম্পাস স্তরে এই হরমোনের উপস্থিতি ছিল অনেক কম।

কিছু ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করে গবেষণায় দেখা গেছে যে, যখন ইঁদুরের মস্তিষ্কে ইরিসিন হরমোন উপস্থিত ছিল তখন তাদের মস্তিষ্ক ছিল সুস্থ। আবার যখন মস্তিষ্ক থেকে ইরিসিন হরমোন সরিয়ে নেয়া হয়েছিল তখন তাদের মস্তিষ্কের সাইনাপস ও স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে গিয়েছিল।

পরে গবেষকরা ব্যায়ামের সঙ্গে ইরিসিনের সম্পর্ক নিয়ে পরীক্ষা করেন। তারা দেখেন, যেসব ইঁদুর পাঁচ সপ্তাহ ধরে নিয়মিত ব্যায়াম করেছে, তাদের স্মৃতিশক্তিতে কোনো ধরনের দুর্বলতার সৃষ্টি হয়নি। পক্ষান্তরে, ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে যাদের ইরিসিন উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছিল প্রতিদিন ব্যায়াম করার পরও তাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি হয়নি।

তাই গবেষণার এই ফলাফল প্রমাণ করে যে, ডিমেনশিয়া ও আলঝেইমার্স রোগ নিরাময়ে একটি উল্লেখযোগ্য চিকিৎসা হিসেবে ইরিসিন হরমোন প্রয়োগ করা যেতে পারে।

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on: