আকারে যত ছোট, গুণে তত বড়। এক কথায় এটাই হল আমড়া। বাংলাদেশে ভিটামিন সমৃদ্ধ ফলের মধ্যে আমড়ার স্থান অন্যতম। বহুমুখি ব্যবহারের জন্য আমড়া সবার কাছে সমাদৃত।
গোল্ডেন আপেলখ্যাত আমড়ার বৈজ্ঞানিক নাম Stondia Dulcis। এটি Anacardiaceae পরিবারভুক্ত। এটি কষ ও অম্ল স্বাদযুক্ত ফল।
পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রতি ১০০ গ্রাম আহার উপযোগী আমড়ায় রয়েছে- শর্করা ১৫ গ্রাম, আমিষ ১.১ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫৫ মিলিগ্রাম, আয়রন ৩.৯ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৮০০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন-বি ১০.২৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-সি ৯২ মিলিগ্রাম, অন্যান্য খনিজ পদার্থ ০.৬ মিলিগ্রাম এবং খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালরি।
এছাড়াও আমড়ায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি, লোহা, ক্যালসিয়াম আর আঁশ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দামি ফল আপেলের চেয়ে আমড়ায় প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও আয়রনের পরিমাণ বেশি। রুচি বৃদ্ধিসহ অসংখ্য গুণাগুণ রয়েছে আমড়ার। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়ায়।
আসুন জেনে নেই নিয়মিত আমড়া খাওয়ার উপকারিতা এবং এর মাধ্যমে যেসব রোগ এড়ানো যায়-
ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ
ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড়ের রোগ, মাংস পেশীর খিঁচুনিসহ অনেক রোগ হতে পারে। তাই প্রতিদিনের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে আমড়া খাওয়া যেতে পারে।
ত্বক ভালো রাখে
ত্বকের ব্রণ কমাতে এবং ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখতে আমড়া দারুণ উপকারী। আমড়ায় প্রচুর ভিটামিন-সি রয়েছে, যা ত্বক উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
রক্তস্বল্পতা রোধ করে
আমড়ায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে, যা রক্তস্বল্পতা রোধে কার্যকরী। আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও ঠিক রাখে।
বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে
আমড়ায় বিভিন্ন দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে, যা পাকস্থলীর কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখে। তাই বদহজম, পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগ থেকে বাঁচতে নিয়মিত আমড়া খেতে পারেন।
সর্দি-কাশি ও ইনফ্লুঞ্জার বিরুদ্ধে কাজ করে
আমড়া বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে এবং সর্দি-কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে। তাই আমড়ার সিজনে প্রতিদিন এই ফল খেলে আপনি নানা সংক্রমণ থেকে সহজেই রক্ষা পেতে পারেন।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
আমড়ায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ক্যান্সারসহ অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। ফলে সহজেই সুস্থ থাকা সম্ভব হয়।
রুচি বাড়ায়
অসুস্থ ব্যক্তিদের মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে আমড়া দারুণ কার্যকর। আমড়া খেলে মুখের অরুচিভাব দূর হয় ও ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়। তাই রুচি বাড়াতে নিয়মিত ফলটি খাওয়া যেতে পারে।
স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
আমড়া রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। তাই আমড়া খেলে স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে।
এছাড়াও দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত, পুঁজ বের হওয়া প্রতিরোধ করে। অরুচি দূর করে, শরীরের অতিরিক্ত উত্তাপ কমায়।
টাইমস/জিএস