স্বাদের সঙ্গে পুষ্টিতেও ভরপুর মাষকলাই ডাল

বাঙালি রসনায় ডালের কদর যুগ যুগ ধরে। খাওয়ার শেষ পাতে ডাল না হলে হয়তো অনেকেই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে পারেন না। রুচিবদলে এই ডালের মধ্যেও রয়েছে বৈচিত্র্য।

ডালের রয়েছে হরেক রকম জাত। এর মধ্যে মাষকলাই ডাল অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। মূলত ভারতীয় উপমহাদেশে এই ডাল বেশ জনপ্রিয়। সবজি কিংবা মাছ বা মাংসের সঙ্গে এই ডাল পরিবেশন করা হয়।

স্বাদবর্ধক ফোড়ন দিয়ে রান্না করা এক বাটি মাষকলাইয়ের ডাল খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বলতেই হবে, আহ্, খেলাম রে!

বিশেষজ্ঞরা বলেন, মাষকলাইয়ের ডালে শতকরা ২০ থেকে ২৩ ভাগ আমিষ থাকে। প্রোটিন ও ভিটামিন বি-এর সমৃদ্ধ উৎস হলো এই ডাল। এ ডাল পেট কেঁচে বর্জ্য নামিয়ে দেয়। সঙ্গে পুরুষের শুক্রাণুও বাড়ায়। রুচিকর ও বলবর্ধক বলে শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের যোগানদাতা এই ডাল।

পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রতি ১০০ গ্রাম আহার উপযোগী মাষকলাইর ডালে রয়েছে- ক্যালরি ৩৪১ মি.গ্রাম, পটাসিয়াম ৯৮৩ মি.গ্রাম, প্রোটিন ২৫ মি.গ্রাম, সোডিয়াম ৩৮ মি.গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৩৮ মি.গ্রাম এবং আয়রন ৭.৫৭ মি.গ্রাম।

আসুন জেনে নেই নিয়মিত মাষকলাই ডাল খাওয়ার উপকারিতা এবং এর মাধ্যমে যেসব রোগ এড়ানো যায়-

শুক্রবর্ধক
মাষকলাই ডাল শুক্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। ‘প্রাকৃতিক উদ্দীপক’ হিসেবে এই ডাল শুক্রসংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করতে পারে। পানিতে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে ঘি দিয়ে ভেজে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।

বলবর্ধক
মাষকলাই ডালে রয়েছে প্রচুর লৌহ বা আয়রন, যা স্বাস্থ্যকর। এটি বল বৃদ্ধি করে শরীরকে সক্রিয় রাখে।

হজমশক্তি বাড়ায়
এতে প্রচুর ফাইবার আছে বলে হজম ভালো হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এই ডাল উপকারী।

হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে
মাষকলাই ডালে থাকা পটাশিয়াম রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। শরীরে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে এ ডাল উপকারী। এতে ম্যাগনেসিয়াম থাকায় রক্তপ্রবাহ বাড়ায় এবং হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে।

পেশি গঠন
পেশির কোষের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে মাষকলাই ডাল। শরীরের বৃদ্ধিতে ডালে থাকা প্রোটিন খুবই দরকারি।

স্নায়বিক রোগ সারাতে
স্নায়বিক দুর্বলতা, স্মৃতি দুর্বলতা, সিজোফ্রেনিয়ার, হিস্টিরিয়ার মতো সমস্যা দূর করতে পারে মাসকলাই।

ব্যথানাশক
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে মাষকলাই ডালের দারুণ ব্যথানাশক গুণের কথা বলা হয়। অস্থিসন্ধির ব্যথা সারাতে এ ডাল উপকারী।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণাতেও মাষকলাই ডালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি দেখা গেছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে।

ত্বকের সুরক্ষায়
স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যায় মাষকলাই। ত্বক থেকে ময়লা, মৃত কোষ সরিয়ে ত্বকের সতেজতা ও ঔজ্জ্বল্য বাড়ায় মাষকলাই। রোদে পোড়া ত্বকের ক্ষেত্রেও এই ডাল উপকারী।

খুশকি দূর করে
মাষকলাইয়ের ডাল মাথায় মাখলে চুল নরম হয়, খুশকি দূর হয়।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: