খুলনা নামের ইতিহাস

বিবর্তনের বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে বাংলাদেশ আজকের রূপ লাভ করেছে। প্রাচীনকালে বাংলাদেশ নামে কোন ভূখণ্ড ছিলনা। এখানে ছিলো নাম না জানা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনপদ। তার মধ্যে অন্যতম ছিল পুণ্ড্রবর্ধন, বরেন্দ্র, বঙ্গ, গৌড়, সমতট, রাঢ়, হরিকেল, চন্দ্রদ্বীপ, সপ্তগাঁও আরও অসংখ্য জনপদ। যেখানে ভিন্ন ভিন্ন শাসকরা শাসন পরিচালনা করতো। খুলনাও এর ব্যতিক্রম ছিলনা।

খুলনার প্রাচীন জনপদের নাম ছিলো সপ্তগাঁও। খুলনা নামের উৎপত্তি নিয়ে মতভেদ আছে। প্রাচীন বাংলার এক ধনপতি সওদাগর তার স্ত্রী খুল্লনার নামে এখানে ভৈরব নদের পূর্বতীরে খুল্লনেশ্বরী মন্দির তৈরি করে। যা লোকমুখে পরিবর্তিত হয়ে খুলনার উৎপত্তি।

আবার কেউ কেউ মনে করেন, খুলনা শহর যেখানে, সে অঞ্চল তখন সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলের অংশ ছিল। এই অঞ্চলের পাশ দিয়ে বয়ে যেত বিশাল ভৈরব নদ যেখানে ঝড় উঠলে ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করত। তখন মাঝিদের জীবন বাঁচাতে ‘খুলোনা, খুলোনা’ বলে সতর্ক করে দিতেন। এ ‘খুলোনা’ শব্দ থেকে খুলনা নামের উৎপত্তি।

প্রাচীনকালে খুলনা এবং সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চল নিয়ে সপ্তগাঁও জনপদ গঠিত হয়েছিল। খুলনা পৌর এলাকা অতীতে জসর (যশোর) জেলার মুরলী থানার অন্তর্গত ছিল। পরে রূপসা নদীর পূর্ব পাড়ে তালিমপুর, শ্রীরামপুর (রহিমনগর) এর কাছে সুন্দরবনের জঙ্গল কেটে নতুন থানা স্থাপন করা হয় এবং এর নাম দেয়া হয় নওবাদ (নয়াবাদ)। ১৮৪২ সালে খুলনা মহকুমার জন্ম হয়। ১৮৮২ সালের ২৫ এপ্রিলের সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী খুলনা জেলার জন্ম হয়।

খুলনা বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে রূপসা এবং ভৈরব নদীর তীরে অবস্থিত। বাংলাদেশের প্রাচীনতম নদী বন্দরগুলোর মধ্যে খুলনা অন্যতম। খুলনা শহর থেকে ৪৮ কি.মি. দূরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মংলা সমুদ্র বন্দর অবস্থিত। পৃথিবী বিখ্যাত উপকূলীয় বন সুন্দরবন খুলনা জেলার দক্ষিণাংশে অবস্থিত। রাজধানী ঢাকা থেকে খুলনা শহরের দূরত্ব সড়কপথে ৩৩৩কি.মি.।

খুলনা জেলার বর্তমান আয়তন ৪ হাজার ৩৯৪.৪৬ বর্গ কিলোমিটার।

বাস, রেলওয়ে, নৌ-যান, বিমান পথে খুলনার আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও আধুনিক করেছে।

 

টাইমস/এসআর/এইচইউ

Share this news on: