দেশে দেশে ভয়াবহ রূপে করোনাভাইরাস

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হলেও এখন তা বিশ্বের ১০৫টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে সাড়ে তিন হাজার মানুষ। চীনের বাইরেও দিন দিন মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ইতালি, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, আমেরিকা, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে আতঙ্কের নাম এখন করোনাভাইরাস। মাস খানিক আগেই অবশ্য এ ভাইরাসকে মহামারী ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

এখন পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনাভাইরাস মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে। বিভিন্ন দেশের সর্বশেষ অবস্থা আতঙ্ক তৈরি করছে বটে।

সৌদি আরব: সীমিত আকারে সৌদি আরবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সৌদি প্রশাসন।

এছাড়া দেশটির তেলসমৃদ্ধ কাতিফ প্রদেশকে রোববার থেকে অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ সৌদি আরবে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের অধিকাংশই এই কাতিফ প্রদেশের বাসিন্দা। এদিকে সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, বাহরাইন ও মিসরসহ ৯টি দেশে সৌদি নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির সরকার।

ভুটান: সোমবার ভুটানে এক ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ। এরপর ছোট্ট দেশটিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যদিও নাগরিকদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।

এদিকে ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে জনগণের মাঝে জীবাণুনাশক বিতরণ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দেশের ধনী ব্যক্তিদের কাছে আর্থিক সহায়তা প্রদানেরও আহ্বান জানিয়েছেন।

ভারত: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভারতের লাদাখে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত দুই ব্যক্তির একজন সম্প্রতি ইরান থেকে ফিরেছেন। এছাড়া সোমবার পর্যন্ত দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে তিন বছরের এক শিশুও রয়েছে। ভারতের কেরালা রাজ্যের বাসিন্দা ওই শিশু কিছুদিন আগে পরিবারের সঙ্গে ইতালি থেকে ফিরেছে।

পর্তুগাল: দেশটির প্রেসিডেন্ট রিবেলো ডি সুজা নিজেকে স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, সম্প্রতি পর্তুগালের উত্তরাঞ্চল থেকে আগত মার্সেলো রিবেলো নামে এক শিক্ষার্থী দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এর কিছুদিন পরেই ওই শিক্ষার্থীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়। এ খবর পাওয়া মাত্রই প্রেসিডেন্ট রিবেলো নিজেকে কোয়ারেন্টাইনে রাখার সিদ্ধান্ত নেন।

ইতালি: চীনের বাইরের দেশ হিসেবে ইতালি ও ইরানে করোনাভাইরাসের প্রকোপ সব থেকে বেশি। এরই মধ্যে ইতালির ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এবার সেই রেশ কাটতে না কাটতেই জানা গেল দেশটির সেনাপ্রধান সালভাতোর ফারিনা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে নিজ বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনে আছেন তিনি।

এদিকে সালভাতোর ফারিনা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন জেনারেল ফেডেরিকো বোনাতো। দেশটিতে এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৩৬০ ছাড়িয়েছে।

 

টাইমস/এসএন/এইচইউ

Share this news on: