মহামারী করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছেন বয়স্করা। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। ইউরোপ আমেরিকায় মারাত্মক আকার ধারণ করেছে এ ভাইরাস।
তবে মহামারী করোনার ভয়াল মৃত্যুমুখ থেকে ৯৫ বছর বয়স্ক এক বৃদ্ধা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ওই বৃদ্ধা সুইজারল্যান্ডের নাগরিক। তার নাম গেট্রুড ফেটন। তিনি দেশটির লে লোকল শহরে বসবাস করেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহ যাবত আইসোলেশনে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে সুস্থ হয়ে ২৭ মার্চ বাড়ি ফেরেন ফেটন।
পরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকাকালীন অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন গেট্রুড ফেটন। তিনি বলেন, হাসপাতালের একটি আইসোলেশন কক্ষে তার চিকিৎসা চলে। সেখানে তাকে কৃত্রিম অক্সিজেন দেয়া হয়। কিন্তু একপর্যায়ে তিনি কৃত্রিম অক্সিজেন না দেয়ার জন্য ডাক্তারদের কাছে অনুরোধ করেন।
কৃত্রিম অক্সিজেন বন্ধ করার ব্যাপারে ফেটন বলেন, এই বয়সে আমাকে কৃত্রিম অক্সিজেন দেয়ার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ আমি জীবনটা কাটিয়ে ফেলেছি, উপভোগ করেছি। এখন আমি শান্তিতে মরতে চাই।
এদিকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর ফেটন বলেন, বাসায় ফিরতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত। এখন আরও কিছুদিন বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ট মানসিক শক্তি পাব। আমার অনেক নাতি-পুতি আছে। এত দিন কেবল আইপ্যাডে তাদের সঙ্গে চ্যাট করেছি। এখন তাদের সশরীরে দেখতে চাই।
করেনা চিকিৎসার বিষয়ে গেট্রুড ফেটন বলেন, হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় আমি বেশকিছু দিন বিছানায় বন্দি ছিলাম। পরে হাসপাতালে নেয়া হয় আমাকে। আমার শরীরে অনেক এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়েছে। চিকিৎসাটা খুব কষ্টকর ছিল।
ফেটন আরও বলেন, মৃত্যু নিয়ে আমার কোনো ভয় নেই। ৯৫ বছর পার করে এসে মৃত্যুকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমি মনে করি, এখনই আমার চলে যাওয়ার সময়। কিন্তু আমি মোটেও ভাবিনি, আমি জীবন নিয়ে বাড়ি ফিরবো।
এদিকে রোববার পর্যন্ত সুইজারল্যান্ডে করোনাভাইরাসে ১৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের অধিকাংশই বয়স্ক।
টাইমস/এসএন/এইচইউ