খাসোগজি হত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘ

জাতিসংঘের তদন্ত কমিটি সৌদি আরবের কর্মকর্তাদের দ্বারা সাংবাদিক জামাল খাসোগজিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার প্রমাণ পেয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তুরস্কের তদন্ত করার উদ্যোগকে সৌদি আরব বাধা দেয়ার সব চেষ্টা করেছে। খবর বিবিসি।

সৌদি সরকারের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক জামাল খাসোগজি ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন। তখন সৌদি আরব ঘটানাটিই অস্বীকার করেছিল।

কিন্তু তুরস্কের কর্মকর্তাদের অনুসন্ধানে যখন রোমহর্ষক তথ্য বেরিয়ে আসে, তখন তোলপাড় সৃষ্টি হয় বিশ্বজুড়ে। তুরস্কের সেই অনুসন্ধানে সৌদি আরবের বাধা সৃষ্টি করার চেষ্টা ছিল দৃশ্যমান। এই বাধা সৃষ্টির বিষয়কে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে।

তাতে বলা হয়েছে, ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক মি. খাসোগজিকে হত্যার ঘটনার যখন ১৩ দিন হয়, তখনও তুরস্কের তদন্তকারি কর্মকর্তাদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। এভাবে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছিল সৌদি আরবের পক্ষ থেকে।

জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, সৌদি আরব তুরস্কের তদন্ত করার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হত্যার ঘটনার পর ১৩দিন পর্যন্ত তদন্তকারিদের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করতে দেয়নি, সে কারণে প্রথমদিকে তদন্তে সমস্যা হয়েছে।

এরপরও তুরস্ক সাংবাদিক মি. খাসোগজিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার ঘটনার তথ্য বের করেছিল। সেই প্রেক্ষাপটে শেষ পর্যন্ত সৌদি আরব হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে। এই হত্যাকাণ্ডে সৌদি আরব ১১জনকে বিচারের মুখোমুখি করেছে এবং তাদের পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড চাওয়া হচ্ছে।

সৌদি কর্মকর্তারা বলে আসছেন, সৌদি আরবের একটি দুর্বৃত্ত দলের হাতে এই সাংবাদিক খুন হন। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

জাতিসংঘের তদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি কর্মকর্তারা আগে পরিকল্পনা করে সাংবাদিক মি. খাসোগজিকে নিষ্ঠুর ও নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। প্রাথমিকভাবে এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এই তদন্ত কমিটির প্রধান অ্যাগনেস ক্লামারড তদন্তের জন্য ২৮শে জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তুরস্ক সফর করেছেন। মিজ ক্লামারড তদন্তে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বাধা সৃষ্টির চেষ্টার সমালোচনা করেছেন।

একই সঙ্গে সৌদি আরবে ১১জনকে বিচারের মুখোমুখি করার যে কথা বলা হচ্ছে, সেই বিচারের স্বচ্ছ্বতা ও নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মিজ ক্লামারড। জাতিসংঘের এই তদন্ত কমিটির আগামী জুন মাসে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার কথা রয়েছে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: