আইএসের সেই শামীমা পুত্রসন্তান জন্ম দিয়েছেন

জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে লন্ডন থেকে সিরিয়ায় পাড়ি দেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগম একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সোমবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

১৯ বছরের শামীমার এটি তৃতীয় সন্তান। তার আগের দুটি সন্তানই অপুষ্টি এবং বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। সিরিয়ায় গিয়ে এই তরুণী নেদারল্যান্ডস থেকে আসা একজন আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেছিলেন।

শামীমা নিজেই জানিয়েছেন, তিনি একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দিয়েছেন।

১৯ বছর বয়সী শামীমা স্কাই নিউজকে বলেন, ‘আমি যা কিছুর মধ্য দিয়ে গিয়েছি, সে জন্য আমার প্রতি মানুষের সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত।’

সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়ে ভুল করেছেন কি না, এমন প্রশ্নে শামীমা বলেন, ‘একদিক থেকে বললে, হ্যাঁ। তবে এ জন্য আমি অনুতপ্ত নই। কারণ, এটি ব্যক্তি হিসেবে আমাকে বদলে দিয়েছে।’

মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাংলাদেশি অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রীন এলাকা থেকে আরও দুজন বান্ধবীসহ আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় পালিয়ে গিয়েছিলেন শামীমা বেগম।

যুক্তরাজ্যের ডেইলি টাইমসের সাংবাদিক অ্যান্থনি লয়েড সম্প্রতি সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় এক শরণার্থী শিবিরে সাক্ষাৎ পান শামীমার। তখন শামীমা তাকে বলেছিলেন, তিনি নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আগে অপুষ্টিসহ বিভিন্ন রোগে ভুগে তার দুই সন্তান মারা গেছে। অনাগত সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখতে যুক্তরাজ্যে ফিরতে চান তিনি।

এরপর থেকে ব্রিটেনে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে যে, নিষিদ্ধ একটি জঙ্গি সংগঠনের যোগ দিতে যাওয়া এই তরুণীকে ফেরত আসতে দেয়া উচিৎ কিনা।

রোববার শামীমার পরিবারের আইনজীবী মোহাম্মদ তাসনিম আখুঞ্জি রেডিও ফোরকে জানান, তারা জানতে পেরেছেন শামীমা একটি শিশুর জন্ম দিয়েছেন। শিশুটি সুস্থ আছে।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এখনও শামীমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা যায়নি। আশা করছি তাড়াতাড়ি তা করা সম্ভব হবে।

ওই আইনজীবী জানান, শামীমার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা খুবই উদ্বিগ্ন। তারা শামীমাকে যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে আনতে চান।

ছেলেসন্তান জন্মের পর শামীমা বলেন, আগেও তার সন্তান হয়েছিল। তাদের সঙ্গে তার ভালো সময় কেটেছিল। তবে এখন পরিস্থিতি কঠিন হয়ে গেছে। তিনি আর নিতে পারছেন না।

আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের কোনো নাগরিক যদি অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব দাবি না করেন, তবে তাকে দেশে ফিরে আসতে দিতে তারা বাধ্য। তবে শামীমাকে যুক্তরাজ্যে ফিরে আসতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: