মনোহর পারিকরের মৃত্যু: জটিল হচ্ছে গোয়ার রাজনীতি

ভারতের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং গোয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিকর দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে ইহলোক ত্যাগ করেছেন। রোববার সন্ধ্যায় গোয়ায় ছেলের বাসভবনে মনোহর পারিকরের মৃত্যু হয়। খবর এনডিটিভির।

অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের জন্য অনেকদিন ধরেই চিকিৎসা চলছিল তার। চিকিৎসার জন্য বহুদিন যুক্তরাষ্ট্রেও ছিলেন তিনি। বেশ কয়েকদিন ধরেই তার শরীর প্রবল খারাপ হতে থাকে। শনিবার সকালে তা খুবই খারাপ অবস্থায় চলে যায়। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই গোয়া, মুম্বাই, দিল্লি ও নিউইয়র্কের একের পর এক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাতায়াত লেগেই ছিল তার।

গোয়ার তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিকর জানুয়ারিতেই জানিয়েছিলেন, ‘আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস ফেলার আগে পর্যন্ত কাজ করে যাব জনগণের জন্য।’

মনোহর পারিকর ছিলেন ভারতের সাবেক প্রভাবশালী আমলা ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী। বর্তমানে তিনি গোয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০১৪ নভেম্বর থেকে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত তিনি ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বপালন করেন। ২০১৭ সালে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে চতুর্থ বারের মতো গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখায় সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর সময় মনোহর পারিকর ছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তার আমলেই ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমানের চুক্তি হয় দ্বিতীয় বারের মতো। যদিও কংগ্রেস দাবি করে আসছে, মনোহর পারিকর ওই চুক্তির ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। ৬৩ বছর বয়সী মনোহর ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা ছিলেন।

তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার মৃত্যুতে সোমবার ভারতজুড়ে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার বিকাল ৫টায় গোয়া রাজ্যের মিরামায় তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। তার আগে সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য পারিকরের মৃতদেহ রাখা হবে রাজ্য বিজেপির প্রধান কার্যালয়ে। তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

জটিল হচ্ছে গোয়ার রাজনীতি

বর্তমানে গোয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই নেতার মৃত্যুতে বর্তমান ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে। দেখা দিয়েছে নানা গুঞ্জন ও হিসাবের ছক। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব কার হাতে তুলে দেওয়া হবে তা নিয়ে আলোচনা করতে রবিবার রাতেই গোয়ায় ছুটে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। রাতভর দলীয় বিধায়ক এবং বিজেপির শরিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক চলে। তবে সেই বৈঠক থেকে কোনো সমাধান হয়নি।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, বিজেপি চাইছে তাদের শিবির থেকেই কাউকে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে বিশ্বজিৎ রানে এবং প্রমোদ সবন্তের নামও প্রস্তাব করেছেন বিধায়করা। তবে এই সংকটের মুখে দলের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন মহারাষ্ট্র গোমন্ত্রক পার্টির(এমজিপি) বিধায়ক সুধীন ধাবালিকার। অন্য দিকে বিজেপির আরেক শরিক দল গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টি (জিএফপি)-ও এই দৌড়ে সামিল হয়েছে। এক দিকে কংগ্রেসের সরকার গঠনের তৎপরতা, অন্য দিকে দুই শরিক দলের চাপ সব মিলিয়ে তিন কাঁটায় বিদ্ধ গোয়া বিজেপি। যে কাঁটা তুলতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিজেপিকে।

 

 

টাইমস/এসআর/এসআই

Share this news on: