ইয়েমেনের ড্রোন ঠেকাতে ব্যর্থ সৌদির বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র

বর্তমানে সামরিক বাজেটে বিশ্বে পঞ্চম অবস্থানে সৌদি আরব। ২০১৯ সালে তাদের সামরিক বাজেট ছিল ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৭ সালে দেশটি সামরিক বাজেটের দিক দিয়ে বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে ছিল।

বিশাল অঙ্কের এই সামরিক বাজেটে ক্রয় করা অস্ত্রের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ সম্প্রতি দেশটিতে একের পর এক ড্রোন ও ক্রুজ হামলা চালাচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন।

দুই-একটা ছাড়া হামলাগুলো শনাক্ত বা রুখে দেয়া কোনোটাই করতে পারেনি সৌদির সংগ্রহে থাকা অত্যাধুনিক রাডার ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

শনিবার এ ধরনের স্বল্প খরচের ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি সৌদি আরামকোর দুটি প্লান্টে হামলা চালায় ইয়েমেন। এই হামলায় দেশটির বিশাল তেল শিল্প আংশিক পঙ্গু হয়ে পড়েছে। এতে দেশটির দৈনিক তেল উৎপাদন কমে অর্ধেকেরও নিচে নেমে গেছে।

হামলাটি ১৯৯০-৯১ সালে উপসাগরীয় সঙ্কটের সময় সাদ্দাম হুসেন কর্তৃক কুয়েতের তেল কূপগুলো জ্বালিয়ে দেয়ার পর ওই অঞ্চলের তেল স্থাপনায় চালানো সবচেয়ে বড় হামলা।

সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এ হামলার পেছনে ইরান ছিল বলে তাদের বিশ্বাস। তবে এ ধরনের অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান।

‘আমরা উন্মুক্ত। কোনো বাস্তব স্থাপনার জন্যই কোনো বাস্তব সুরক্ষা নেই,’ বলেছেন সৌদি এক সূত্র।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সৌদি নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, এই হামলাটি সৌদি আরবের জন্য ৯/১১ হামলার মতো, এটি খেলা পরিবর্তন করে দেয়ার মতো।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, কোথায় সেই বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও মার্কিন অস্ত্র, রাষ্ট্র ও এর তেল স্থাপনাগুলো সুরক্ষার জন্য যার পেছনে আমরা শত শত কোটি ডলার খরচ করেছি? তারা যদি এটি (হামলা) এত নিখুঁতভাবে করতে পারে তাহলে তারা লবনমুক্তকরণ প্লান্ট ও অন্যান্য লক্ষ্যেও আঘাত হানতে পারবে।

সৌদি আরবের প্রধান বিমান প্রতিরক্ষা পদ্ধতিতে বহুদিন ধরেই দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী প্যাট্রিয়ট পদ্ধতি মোতায়েন আছে। প্রধান প্রধান শহর ও স্থাপনাগুলো সুরক্ষার জন্যই সেগুলো মোতায়েন করা হয়েছে।

রাজধানী রিয়াদসহ সৌদি আরবের বিভিন্ন শহর লক্ষ্য করে হুতিদের ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে মোকাবেলা করেছে এই ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী পদ্ধতিটি। কিন্তু ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র আরও ধীরগতিতে অল্প উচ্চতা দিয়ে চলায় প্যাট্রিয়টের পক্ষে এগুলোকে যথাসময়ে শনাক্ত করে ধ্বংস করা কঠিন।

পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ড্রোন সৌদি আরবের জন্য বিশাল এক চ্যালেঞ্জ। রাডারের পাল্লার নিচ দিয়ে উড়ায় ও ইয়েমেন-ইরাকের সঙ্গে বিশাল সীমান্ত থাকায় রাষ্ট্রটি বেশ অরক্ষিত হয়ে পড়েছে।

 

টাইমস/এএইচ/এসআই

Share this news on: