রাজধানীতে তিনটি বড় ফুডকোর্ট চালায় ইউনাইটেড গ্রুপ। গুলশান, ধানমন্ডি ও মাদানী অ্যাভিনিউ সড়কের সাঁতারকুলে তিন ফুডকোর্টে প্রায় একশো’টির মতো দেশীয় উদ্যোক্তাদের রেস্টুরেন্ট আছে। করোনাকালীন রেস্টুরেন্টগুলো বন্ধ থাকলেও সেখানে এখন ভাড়া আদায়ে জন্য কর্তৃপক্ষ চাপ দিচ্ছে বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। এমনকি এখনও রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকলেও ১০ জুনের মধ্যে ভাড়া দিতে নোটিশ পাঠিয়েছে তারা।
ধানমন্ডি ‘শেফ’স টেবিল’-এর কয়েকটি রেস্টুরেন্টের উদ্যোক্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রেস্টুরেন্ট থেকে প্রতিমাসে ভাড়া এবং ইউটিলিটি বিল নেয় ইউনাইটেড গ্রুপ। তার সঙ্গে রেস্টুরেন্টে খাবার বিক্রি থেকেও কমিশন নেয়। এতে যদি লাভ নাও হয় তাতেও বিক্রির অংশ থেকে কমিশন নেয় ইউনাইটেড গ্রুপ।
এখন গেল ৩ মাস থেকে রেস্টুরেন্ট বন্ধ। এমন অবস্থায় ভাড়া ও ইউটিলিটির জন্য চাপ দিতে শুরু করেছে ইউনাইটেড। অথচ এখনও রেস্টুরেন্ট খুলেইনি।
গুলশান ‘শেফ’স টেবিল’-এর আরেকটি রেস্টুরেন্ট উদ্যোক্তাও নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রেস্টুরেন্ট খোলা থাকার সময় যদি লাভ নাও হয় তাহলেও তারা বিক্রি থেকে একটা অংশ কমিশন নিয়ে থাকে। এখন ক্ষতির উপর ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে এর কোন ভাগীদার না হয়ে উল্টো ভাড়া ও বকেয়া ইউটিলিটি চেয়ে বসেছে।
গুলশান ২ নম্বরের ৯০ নম্বর সড়কের গুলশান সেন্টার পয়েন্টের তৃতীয় তলায় ‘শেফ’স টেবিল’ নামে ফুডকোর্ট চালু হয় ২০১৮ সালে জুলাইতে। এখানে ২৮টি রেস্টুরেন্ট আছে।
আর গত বছর ধানমন্ডিতে চালু হয় শেফ’স টেবিল। সেখানে আছে ১৮টি রেস্টুরেন্ট। আর নতুন চালু হওয়া সাতারকুলে আছে ৩২টি।
সাতারকুলের একটি রেস্টুরেন্ট উদ্যোক্তা জানান, এখনও এখানে ব্যবসা জমে উঠেনি। শুক্র ও শনিবার ছাড়া ক্রেতা আসে না। এছাড়া দিনের মধ্যে শুধু বিকেল বেলাতে ক্রেতা সমাগম হয়। এমন অবস্থায় চালুর মাস দুয়েকের মধ্যে করোনা পরিস্থিতিতে এসে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় সব রেস্টুরেন্ট।
এখন গেল ৩ মাসের ভাড়া ও ইউটিলিটি কিভাবে দেবেন সে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।
উদ্যোক্তাদের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শেফ’স টেবিল-এর অপারেশন ম্যানেজার আজিজুর আলম খান জানান, করোনাকালীন তারা ভাড়া এবং ইউটিলিটি দেওয়ার জন্য বলেছেন। তবে কোন সময়সীমা বেধে দেননি।
এছাড়া ১০ তারিখের মধ্যে বিল পরিশোধের চাপ দেওয়া প্রসঙ্গটি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা কোন সময়সীমা দেইনি। এভাবে প্রেশার দেওয়ার কিছু নেই। কিভাবে মালিকরা দেবেন কিভাবে কালেক্ট করা যায় সেটা নিয়ে আমরা এখনও আলোচনা করছি। আলোচনা করে সমাধান করবো।’
রেস্টুরেন্ট মালিকরা জানান, আমরা রেস্টুরেন্ট খুলে ব্যবসা করতে চাই। ক্ষতির সঙ্গে কর্তৃপক্ষের অংশীদার চাই। কারণ তারা আমাদের বিক্রি থেকে কমিশন নেয়।
১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউনাইটেড গ্রুপের রয়েছে বিদ্যুৎ, আবাসন, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ। এরমধ্যে ইউনাইটেড হাসপাতাল সুপরিচিত।
টাইমস/টিএইচ