পদ্মা সেতুর সাড়ে চার কিলোমিটার দৃশ্যমান

করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যেও থেমে নেই পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ। সেতুর ৩০তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে ৪ হাজার ৫০০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে সেতুর ২৬ ও ২৭ নম্বর পিয়ারের (খুঁটি) ওপর বসানো হয়েছে ৩০তম স্প্যানটি।

জানা গেছে, শুক্রবার সকালে মাওয়া প্রান্তের কুমারভোগ ইয়ার্ড থেকে ৩ হাজার ১৫০ মে. টন ওজনের ‘৫বি’ নম্বর স্প্যান ভাসমান ক্রেনে করে নিয়ে যাওয়া হয় খুঁটির কাছে। পরে স্প্যানটি প্লেস করে রাখা হয়। স্প্যানটি খুঁটিতে বসানোর জন্য আগেই ২৭ নম্বর খুঁটিতে লিফটিং ফ্রেম (স্প্যানকে ঝুলিয়ে রাখার যন্ত্র) স্থাপন করা হয়েছিল।

পদ্মাসেতু বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর জানান, করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্য পদ্মাসেতুর ৩০ তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে ৪ হাজার ৫০০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। এখন বাকি থাকল ১১টি স্প্যান বা দেড় কিলোমিটারের একটু বেশি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনার মধ্যেও পদ্মাসেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। এতে পদ্মার পাড়ের মানুষ খুশি।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে পদ্মাসেতুর কাজে তেমন কোন অসুবিধা হয়নি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে পুরো প্রকল্পটি আইসোলেটেড রাখা হয়েছে। তাই এখানকার দেশী বিদেশী কর্মীরা অনেকটা নিরাপদ। এখানে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে না। বাইরের কাউকেই এখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এই সেতুর ১০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। এর মধ্যে সারা দেশে সাধারণ ছুটির মধ্যেও ২৭ মার্চ থেকে আজ ৩০ মে পর্যন্ত ৪টি স্প্যান বসানো হয়েছে। করোনা দুর্যোগের মধ্যেও সেতুর ৪২টি পিয়ারের সব কটিতেই স্প্যান বসানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। একই সঙ্গে রোডওয়ে ও রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ এগিয়ে চলছে। পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে ২০টির মধ্যে ১০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। এ ছাড়া নদীর মাঝখানে একটি স্প্যান এবং জাজিরা প্রান্তে ২০টির মধ্যে ১৯টি স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে। সেতুর জন্য প্রয়োজনীয় ৪১টি স্প্যানের মধ্যে মাওয়ায় এসেছে ৩৯টি। এর মধ্যে ৩০টি স্থাপন করা হয়েছে। ৯টি স্প্যানে মাওয়ায় কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ওয়েল্ডিং, অ্যাসেম্বলিং ও পেইন্টিংয়ের কাজ চলছে। বাকি দুটি স্প্যানের সব অংশসহ অন্য সব সরঞ্জাম ১৫ জুনের মধ্যে মাওয়া কন্সট্রাকশন সাইটে পৌঁছে যাবে।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের বলেন, আগামী ২০ জুন সেতুর ৩১ তম স্প্যান বসানোর সিডিউল ঘোষণা করা হয়েছে; এটি বসবে ২৫ ও ২৬ নম্বর খুঁটিতে। এই ৩০ ও ৩১ তম স্প্যান স্থাপনের মধ্য দিয়ে সেতুটি সরাসরি জাজিরা প্রান্ত থেকে মাওয়ার অংশ স্পর্শ করবে। ৩১ তম স্প্যান বসলে জাজিরার অংশে আর কোন স্প্যান বসানো বাকি থাকবে না। আর মাওয়া অংশে স্প্যান বসানো বাকি থাকছে ১০টি। সেগুলো বসানো সম্পন্ন হলে সেতুর পূর্ণ অংশ ৬.১৫ কিলোমিটার দৃশ্যমান হবে।

জানা গেছে, মূল সেতুর ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ৫৯৪টি ও ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১ হাজার ১০৫টি স্থাপন করা হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা ভায়াডাক্টে ৪৮৪টি সুপার টি-গার্ডারের মধ্যে ১৪৮টি স্থাপন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মূল সেতুর ৮৭ শতাংশ নদীশাসন কাজের ৭১ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাংলাদেশ সিরিজের জন্য শক্তিশালী দল ঘোষণা জিম্বাবুয়ের Apr 24, 2024
img
তাপপ্রবাহে ‘অতি উচ্চঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ Apr 24, 2024
img
এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানবন্ধন Apr 24, 2024
img
ফের কমলো স্বর্ণের দাম Apr 24, 2024
img
আপিল বিভাগে তিন বিচারপতি নিয়োগ, প্রজ্ঞাপন জারি Apr 24, 2024
img
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী Apr 24, 2024
img
উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করলে ব্যবস্থা : ওবায়দুল কাদের Apr 24, 2024
img
কক্সবাজারে কত রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, তালিকা চান হাইকোর্ট Apr 24, 2024
img
কক্সবাজারগামী ঈদ স্পেশাল ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ২ বগি লাইনচ্যুত Apr 24, 2024
img
গরমে গোসলের পানিতে নিমপাতা মেশাবেন যে কারণে Apr 24, 2024