আবারও ‘জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা’ করছিলেন রিপন

গাজীপুর থেকে গ্রেফতার হওয়া হলি আর্টিজান মামলার আসামি মামুনুর রশিদ রিপন আত্মগোপনে থেকে সংগঠনকে পুনরায় সংগঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। রোববার দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান মুফতি মাহমুদ খান।

তিনি বলেন, রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে দেশের জঙ্গিরা নেতৃত্বহীন হয়ে পড়ে। এ সময় বাংলাদেশের পার্শবর্তী একটি দেশে আত্মগোপনে চলে যান রিপন। আত্মগোপনে থেকেও তিনি পুনরায় জঙ্গিদের সংগঠিত করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন।

মুফতি মাহমুদ বলেন, ২০১৮ সালের শুরুর দিকে পুনরায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে জঙ্গিদের সংগঠিত করতে থাকেন রিপন। সম্প্রতি তারা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ম্পর্শকাতর স্থান ও আদালত প্রাঙ্গণে হামলার পরিকল্পনা করেন। শনিবার রাতে গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকা থেকে রিপনকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, গুলশানের হলি আর্টিজান মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি রিপন হামলার অর্থ, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী ছিলেন। তিনি জেএমবির অন্যতম শুরা সদস্য।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতার করার সময় মামুনুর রশিদের কাছ থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও একটি ডায়েরি ও চারটি খসড়া মানচিত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিপন জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার স্বীকারোক্তি দিয়েছে জানিয়ে মুফতি মাহমুদ বলেন, ১৯৮৮ সালে বগুড়া জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন রিপন। তার শিক্ষা জীবন শুরু হয় স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে তিনি তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পরবর্তীতে তার বাবা তাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, এরপর তিনি ঢাকার মিরপুর, বগুড়ার নন্দীগ্রাম ও নওগাঁর বিভিন্ন মাদ্রসায় লেখাপড়া করেন। সর্বশেষ তিনি ২০০৯ সালে চাপাইনবাবগঞ্জের মাদ্রাসাতুল দারুল হাদিস থেকে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি বগুড়ার সাইবার টেক নামক একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে অফিস অ্যাপ্লিকেশন কোর্স সম্পন্ন করে ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করেন।

মুফতি মাহমুদ খান আরও জানান, ২০১৩ সালে বগুড়ায় সাইবার টেক চাকরিরত অবস্থায় তার পূর্ব পরিচিত ডা. নজরুল নামের এক ব্যক্তির কাছে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হন রিপন। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে তিনি জেএমবির প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েন।

তিনি জানান, জেএমবিতে অনুর্ভুক্তির পর ডা. নজরুল তার সাংগঠনিক নাম দেন রিপন। প্রাথমিকভাবে তার দায়িত্ব ছিল ইয়ানতের (চাঁদা) সংগ্রহ করে ডা. নজরুলের কাছে পৌঁছে দেয়া। ডা. নজরুল ওই সময় জেএমবির একাংশের আমির ছিলেন। ডা. নজরুলের আস্থাভাজন হিসেবে রিপন অল্প সময়ের মধ্যে জেএমবির ওই অংশের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

 

টাইমস/কেআরএস/এক্স

Share this news on: