ফরিদপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় এক ব্যক্তি নিহত

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় এক ব্যক্তি নিহত ও তিন জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কোড়কদী ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই ব্যক্তির নাম সিদ্দিকুর রহমান মোল্লা (৬৩)। তিনি কৃষি কাজ করতেন এবং ওই গ্রামের মৃত আদিলউদ্দিন মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন সিদ্দিকুরের ছেলে কামরুল (৪০), মনিরুল ইসলাম (২৫) ও হানিফ মোল্লা (২৪)। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কোড়কদী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মো. মুকুল হোসেন রিক্তর সাথে গত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সাবেক ইউপি সদস্য মো. আহমেদ আলীর বিরোধ চলে আসছিল। এর পাশাপাশি আহমেদ আলীর ওই এলাকায় তার নিজের কিছু জমি বিক্রি করে ক্রেতাদের কাছ থেকে টাকা নিলেও জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় এলাকাবাসী কয়েকজনের সাথে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। তারা পরবর্তীতে ইউপি চেয়ারম্যানে সাথে যোগ দেয়। এ ঘটনা নিয়ে প্রায়ই দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আসছিল। ২০১৭ সালে আহমেদ পক্ষ তার প্রতিপক্ষের বেশ কিছু বাড়ি ভাংচুর করে। এর প্রতিবাদে মুকুল চেয়ারম্যান পক্ষ আহমেদের নির্মাণাধীন একটি পাকা দালান ভাঙচুর করে এবং ছাদে কয়েকটি ছিদ্র করে দেয়। এর পর থেকে আহমেদ এলাকা ছেড়ে মধুখালী উপজেলা সদরে বসবাস করতেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন নিহত সিদ্দিকুরের ছেলে কামরুল জানান, তিনি ভোরে মাগুরার একটি বাজারে মরিচ বিক্রি করতে যান। মরিচ বিক্রি শেষে বাড়িতে ফিরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভাত খাচ্ছিলেন। এমন সময় আহমেদের ৩০-৪০ জন সমর্থক রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে এসে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তিনি যেতে অস্বীকার করলে রামদা দিয়ে কোপ দেয় তারা। তখন তার বাবা সিদ্দিকুর ও প্রতিবেশী কয়েকজন তাকে বাঁচাতে এলে তারা সকলে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে আহত হন। এর মধ্যে সিদ্দিকুরের বুকের ডান পাশে রামদায়ের কোপ লাগে। পরে এলাকাবাসী সিদ্দিকুরসহ আহতদের উদ্ধার করে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. কবির সর্দার সিদ্দিকুরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

কোড়কদী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মো. মুকুল হোসেন বলেন, জায়গা জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আহমেদের সমর্থকরা সিদ্দিকুরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে এবং তার ছেলেসহ তিনজনকে আহত করে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে সাবেক ইউপি সদস্য আহমেদ আলী বলেন, তিনি এলাকায় নেই। বৃহস্পতিবার সকালে কাটাখালী এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছে এবং একজন মারা গেছেন বলে তিনি জেনেছেন।

তিনি বলেন, ‘জানতে পেরেছি এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান মুকুলের দুই দল সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।’

নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে মধুখালী থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, কোড়কদীর কাটাখালীতে প্রতিপক্ষের হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: