করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মাঝেও দেশের সবগুলো ব্যাংক তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। প্রথমদিকে ব্যাংকিং সেবা সীমিত করা হলেও এখন পুরোদমে চলছে সব কাজ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নিয়ম থাকলেও গ্রাহকদের অসচেতনতার ফলে ব্যাংক পাড়ায় ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। এরই মধে দেশের প্রায় দুই হাজারের বেশি ব্যাংক কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন অন্তত ৩৬ জন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন ব্যাংকগুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে আবারও জমে উঠেছে লেনদেন, ঋণ কার্যক্রমসহ ব্যাংকিং সেবা। গতি ফিরেছে দেশের অর্থনীতির চাকায়।
কিন্তু বিভিন্ন ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, গ্রাহক পর্যায় থেকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব মানা হচ্ছে না। এমনকি সামাজিক দুরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয় নিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটছে।
ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে কড়াকড়ি আরোপ করা দুরূহ হয়ে উঠেছে। এতে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন ব্যাংকাররা। প্রতিদিনই বাড়ছে ব্যাংক কর্মকর্তাদের করোনায় আক্রান্তের হার।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ব্যাংকগুলোতে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে দুই হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৬ জন ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। শুধুমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোরই (সোনালী, রূপালী, জনতা এবং অগ্রণী) ৮৭৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এসব ব্যাংকের ২৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী মারা গেছেন।
জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে কোভিড-১৯-এ আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি। সোনালী ব্যাংকের ৪২৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৫ জন প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। বাকিরা অন্যান্য শাখার। এছাড়া এরই মধ্যে এ ব্যাংকটির উর্ধ্বতন ৬ কর্মকর্তা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
এছাড়া জনতা ব্যাংকের ২০০ কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন পাঁচজন। অগ্রণী ব্যাংকের ১৪০ কর্মকর্তা সংক্রমিত এবং ৯ জন মারা গেছেন। রূপালী ব্যাংকের ১১১ কর্মকর্তা আক্রান্ত এবং তিনজনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়।
অপরদিকে দেশের বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকেও ছড়িয়েছে করোনার থাবা। বেসরকারি সিটি ব্যাংকের তিনজন, এনসিসি ব্যাংকের চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ শাখার একজন, উত্তরা ব্যাংকের ঢাকার শান্তিনগর শাখার একজন, ন্যাশনাল ব্যাংকের একজন, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের দুইজন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একজন, ওয়ান ব্যাংকের একজন এবং এক্সিম ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এছাড়া সকল ব্যাংকের অভিভাবক বাংলাদেশ ব্যাংকেও প্রায় শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন দুইজন।
টাইমস/এসএন