থানায় এনে যুবলীগ নেতাকে মারধর: দুর্গাপুরের ওসি প্রত্যাহার

নেত্রকোনার দুর্গাপুর থানার ওসি মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে একজন যুবলীগ নেতাকে থানায় এনে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে ওসিকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

নেত্রকোনা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জেলা গোয়েন্দা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ নুর এ আলমকে দুর্গাপুরের ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার যুবলীগ নেতার নাম আলম তালুকদার (৩২)। তিনি দুর্গাপুরের বাকলজোড়া ইউনিয়ন যুবলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ও বাকলজোড়া এলাকার মৃত আলাল তালুকদারের ছেলে। আহত অবস্থায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় আলম তালুকদার পৌর শহরের এমপির মোড় এলাকায় সড়কের পাশে অবস্থান করছিলেন। এসময় মো. আব্দুল কাইয়ুম নামে স্থানীয় এক ছাত্রদলকর্মীসহ তিনজন একটি মোটরসাইকেলে করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি দেখে আলম তালুকদার কাইয়ুমকে মোটরসাইকেল থামাতে বলেন। কিন্তু কাইয়ুম চলে যেতে চাইলে আলম তালুকদার ও তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন দৌড়ে গিয়ে কাচারি মোড় এলাকায় কাইয়ুমকে আটক করে। এসময় কাইয়ুমের সঙ্গে থাকা দুই সহযোগী দৌড়ে পালিয়ে যান। এসময় আলম তালুকদারের সঙ্গে কাইয়ুমের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আলম পাশের একটি ঘরে নিয়ে কাইয়ুমকে জিজ্ঞাসাবাদসহ মারধর করে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে আলম ও কাইয়ুমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

থানায় কাইয়ুম আলমের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ আনেন। এসময় থানার ওসি মিজানুর রহমান আলম তালুকদারকে থানায় বেধড়ক মারধর করেন। এতে আলম গুরুতর আহত হলে পুলিশ ও স্বজনরা তাকে প্রথমে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত ১০টার দিকে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

এদিকে এ ঘটনার পর মঙ্গলবার সকালে নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মুহাম্মদ ফকরুজ্জামান জুয়েল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মো. আল আমিন হোসাইন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে দুপুরের পর ওসি মিজানকে দুর্গাপুর থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

এছাড়াও ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ রেঞ্জ অফিস থেকে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- রেঞ্জ অফিসের পুলিশ সুপার ফারুক, নেত্রকোনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন হোসাইন।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ওসি মিজানের কিছু কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। একজন পুলিশ কর্মকর্তার যে ধরণের আচরণ প্রয়োজন, মিজান তা করেননি। মিজানকে থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইন্সে যুক্ত করা হয়েছে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রেমিট্যান্স উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি : সমাজকল্যাণমন্ত্রী Apr 18, 2024
img
ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা Apr 18, 2024
img
গবেষণায় বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া শিশুখাদ্য সেরেলাক নিয়ে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য Apr 18, 2024
img
আ.লীগের এমপি-মন্ত্রীর সন্তান-স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন করতে মানা Apr 18, 2024
img
আইপিএল থেকে ডাক পেয়েও যে কারণে যেতে পারেননি শরিফুল Apr 18, 2024
img
রাত পোহালেই শিল্পী সমিতির নির্বাচন, কে লড়ছেন কার বিপক্ষে Apr 18, 2024
img
লিটারে ৪ টাকা বেড়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম Apr 18, 2024
img
মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা বেতনের কর্মচারী ছিলেন জিয়াউর রহমান : পররাষ্ট্রমন্ত্রী Apr 18, 2024
img
অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা দেশের মানুষের জন্য কোনো কাজ করেনি: প্রধানমন্ত্রী Apr 18, 2024
img
ব্যবসায়ী নাসিরের মামলা : পরীমণিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি Apr 18, 2024