তরুণ চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের আত্মহত্যার একদিন আগে বোন মিতুকে একটি মেইল পাঠিয়েছিলেন আফসানা হক চৌধুরী।
৩০ জানুয়ারি মিতুকে পাঠানো ওই মেইলটি পড়ে মনে হয়েছে, ভগ্নিপতি আকাশের সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতেই বোনকে মেইলটি করেছিলেন আফসানা।
কিন্তু মেইলটি ফেসবুকে ভাইরাল হলে নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়। অনেকে বলেন, আফসানার মেইলটি পড়ে মনে হয়েছে, মিতুর কারণেই ডা. আকাশ আত্মহত্যা করেছেন।
সর্বপ্রথম মেইলটি ফেসবুকে পোস্ট করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান বিষয়ক উপসম্পাদক মোহাম্মদ তাওহীদুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি তার ওয়ালে মেইলটি পোস্ট করে লিখেন-‘কারা আকাশ ভাইয়ের হত্যার জন্য দায়ী!!! জানতে চান।তাহলে মিতুর ছোট বোন মীমুর ৩০ জানুয়ারিতে পাঠানো মেইলটা পড়ে দেখুন!!!’
তবে সমালোচকদের অভিযোগ অস্বীকার করে আফসানা হক বলেছেন, মূলত: আকাশের হয়েই ওই মেইলটি তিনি তার বোন মিতুকে পাঠিয়েছিলেন।
এ নিয়ে শুক্রবার তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন আফসানা।
তিনি লিখেন, ‘নিচে যে স্ক্রিনশট দেয়া হয়েছে, ওইটা আমার দ্বারা মিতু আপুকে পাঠানো একটি ইমেইল। মেইলটি আমিই লিখেছি, কিন্তু কী অবস্থায় লিখেছি ওইটা একটু বলি।
কিছুদিন ধরে আকাশ ভাই আমাকে প্রতিনিয়ত ফোন দিত, কথা বলত। আমি বুঝতে পারছিলাম যে, আকাশ ভাইয়া ডেস্পারেট হয়ে যাচ্ছে। মিতু আপু উনাকে ছেড়ে চলে যাবে, ডিভোর্স দিয়ে দিবে, ওই জিনিসটা উনি মানতেই পারছিলেন না।
উনি (আকাশ) আমাকে অনেকভাবে বুঝাতে চাইলেন, যেন আমি আমার পরিবারের বিপক্ষে কথা বলি। সব কথা মেসেঞ্জারে নাই, কারণ উনি আমাকে ডিরেক্ট ফোন দিতেন। এবং অনেক সময় আমি বিপক্ষে বলেও ফেলতাম। উনি আমাকে রাত ১২টা, সকাল ৭টা এমন সময়েও ফোন দিতেন, এবং আমি ভাবছিলাম যে আকাশ ভাইয়ের এই কথা টা যদি মানি তাহলে হয়ত একসময় সব ঠিক হয়ে যাবে।
আকাশ ভাই আমাকে বার বার করে বলতেন, আমি যেন আমার পরিবারের বিরুদ্ধে পিঞ্চ করে কথা বলি।
মাঝে মাঝে আকাশ ভাইয়ের উপরে দয়া হত, এবং অনেক সময় আকাশ ভাইয়ের কথা শুনে নিজের পরিবারকে পিঞ্চ করে কথা বলে ফেলতাম, যেটা আমি পর মুহূর্তেই অনেক আফসোস করতাম। আমি একদিন উনার সাথে "ডিপ্রেশন" নিয়েও কথা বলতাম, কারণ আমি একটু একটু বুঝতে পারছিলাম, উনার মেন্টাল স্টেট কি অবস্থায় আছে।
উনার জিদ, উনার ডিপ্রেশন হয়ে যাচ্ছে এইটা আমি উনাকে বুঝাতে চাইতাম। মাঝে মাঝে যখন বুঝতাম যে উনার কথার কোন ঠিক থাকত না। এক মুহূর্তে এক কথা, পরের মুহূর্তে পুরা উল্টা কথা বলতেন। এসবের আমার কাছে স্ক্রিনশট নাই, কিন্তু আল্লাহ জানেন উনার সাথে আমার কি কি কথা হত। উনার কথাগুলা কে খুব বেশি গায়ে নিতাম না, কারণ ভাবতাম যে সবকিছু একসময় ঠিক হয়ে গেলে সবাই এইসব ভুলে যাবে।
যেদিন আমি এই ইমেইলটা পাঠাই, তার কিছুদিন আগ থেকেই আকাশ ভাইয়া আমাকে বলছিলেন, যে মিতু আপুকে ইমোশনালি পিঞ্চ করে একটা ইমেইল পাঠাই, যাতে মিতু আপু যুক্তরাষ্ট্র না গিয়ে দেশে থেকে যায়। উনিই আমাকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন কি লিখব। আমি উনার কথা শুনে, উনি যখন বার বার প্রেশার দিচ্ছেন, তখন আমি ইমেইলটা পাঠাই মিতু আপুকে, এবং তার পরেই খুব বেশি আফসোস করি, যে কেন পাঠালাম।
আকাশ ভাই আত্মহত্যা করেছেন এবং এর জন্য উনি নিজেই দায়ী,উনার জিদ দায়ী।
আরেকটা কথা, পুলিশ যখন বলল যে তারা আকাশ ভাইয়ের ফোন জব্দ করেছে, তাহলে ছবিগুলা কোত্থেকে আসছে? পুলিশকেও কি বিশ্বাস করতে পারব না এখন আর ‘
টাইমস/এক্স