পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জলসায় হামলা-ভাংচুর

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের পূর্বঘোষিত বার্ষিক সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে জেলা শহর ও আশপাশ এলাকা ব্যাপক হামলা-ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে।

বিক্ষুব্ধ জনতা শহরে ও জেলা শহরের আহমদনগরে তাণ্ডব চালায়। তারা আহমদনগরে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের লোকজনদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ গ্রামবাসীর ওপর হামলা চালায়।

পুলিশ জানিয়েছে, বিগত কয়েক দিনের উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে জেলা প্রশাসন জলসার অনুমতি বাতিল করলেও মঙ্গলবার রাতে শহরের আহমদনগর এলাকার আহমদিয়াদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা চালানো হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে অর্ধশত আহত হন। হামলা-সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে অন্তত ২১ জনকে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

পুলিশ জানায়, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাত দিবাগত সাড়ে ১১টা থেকে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। শহরে ও আহমদনগর এলাকায় পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

ঘটনার পর রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবদুল্লাহ সাজ্জাদ, জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন, পুলিশ সুপার মো. গিয়াসউদ্দিন আহমদসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের দেখতে যান।

বর্তমানে জেলা শহরসহ ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এর আগে আহমদিয়া মুসলিম জামাত ২২ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি আহমদ নগর এলাকায় তিন দিনের বার্ষিক সালানা জলসা আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু ওই জলসা বন্ধের দাবিতে খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ, ঈমান আকিদা রক্ষা কমিটি, ইসলামী যুব সমাজ ও স্থানীয় তৌহিদি জনতার ব্যানারে বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক সংগঠন ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই আন্দোলনে নামে।

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীও এক বিবৃতিতে ওই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আহমদিয়া জলসা বন্ধের দাবি তোলেন।

এই প্রেক্ষাপটে পঞ্চগড়ের স্থানীয় প্রশাসন সমঝোতার চেষ্টায় দুই পক্ষের নেতাদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করে। এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আন্দোলনকারী নেতাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের এক বৈঠকে জলসার সিদ্ধান্ত বাতিলের কথা জানানো হয়। তারপর রাতে হামলার এই ঘটনা ঘটে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: