ভিআইপি ওয়ার্ডে যত দুর্ভোগ

ভিআইপি এলাকা হিসেবে পরিচিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক নম্বর ওয়ার্ড। কিন্তু ওই ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা, গ্যাস-পানি সমস্যা, ময়লা-আবর্জনায় দুর্গন্ধসহ নানা সমস্যায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বাসিন্দারা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক নম্বর ওয়ার্ড ঘুরে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় ‘এ’ ব্লক ও ‘সি’ ব্লক নিয়ে এক নম্বর ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে। ওই ওয়ার্ডে রয়েছে আঞ্চলিক কার্যালয় জোন-৪, আনসার ও ভিডিপি সদর দফতর, ডেসার আঞ্চলিক কার্যালয় জোন-৪, খিলগাঁও থানা, খিলগাঁও টেলিফোন ভবন ও খিলগাঁও পুলিশ ফাঁড়ি। এছাড়াও ওই ওয়ার্ডে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও একটি খেলার মাঠ রয়েছেন। এই ওয়ার্ডের পূর্ব দিকে গোড়ান, পশ্চিমে মালিবাগ, উত্তরে তালতলা চৌধুরীপাড়া এবং দক্ষিণে বাসাবো এলাকা অবস্থিত।

সম্প্রতি খিলগাঁওয়ের ওই ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, এলাকার অধিকাংশ রাস্তাঘাট সরু বা চাপা। এ কারণে প্রায়ই লেগে থাকে যানজট। এছাড়াও ফুটপাতগুলো দখল করে ব্যবসা করছে হকাররা। এমনকি যত্র-তত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখায় এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সামনে রয়েছে ময়লার স্তুপ। আর ওই ময়লার স্তুপের পাশ দিয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করছেন। সেখান থেকে দুর্গন্ধ পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, স্কুলের সামনে গাছে নিচে প্রতিদিন ময়লা-আবর্জনা স্তুপ করে রাখা হয়। রাতে সেখান থেকে সিটি করপোরেশেনর পরিচ্ছন্নকর্মীরা সেগুলো নিয়ে যায়। নির্ধারিত স্থান না থাকায় এলাকাবাসী সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখে বলেও জানান তিনি।

স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান, স্কুলের সামনে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় পুরো এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে স্কুলে প্রবেশের সময় ও স্কুল ছুটির পর ময়লা স্তুপের পাশ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এ সময় দুর্গন্ধের কারণে তাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়।

শুধু ময়লা ও আবর্জনা নয়, বৃষ্টির দিনে এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয় বলে জানিয়েছেন আখলিমা বেগম নামের এক বাসিন্দা। তিনি বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, ওয়ার্ডের খিলগাঁও মডেল স্কুলের পাশেই জোড়পুকুর খেলার মাঠ। এলাকার একমাত্র মাঠটি সামান্য বৃষ্টির পানিতেই তলিয়ে যায়।

সরেজমিন জোড়পুকুর খেলার মাঠে গিয়ে দেখা গেছে কয়েকজন যুবক খেলাধুলা করছে। তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমে তারা মাঠে খেলাধুলা করতে পারেন না।

করিম উদ্দিন নামের আরেক বাসিন্দা জানান, ওয়ার্ডের ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা হয় না। তাই অল্প বৃষ্টি হলেই পুরো এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এছাড়াও এলাকায় সুয়ারেজ লাইনগুলো খোলা রাখা হয়। তাই বৃষ্টি হলেও ওই সুয়ারেজের লাইন দিয়ে ময়লা পানি উপচে উঠে যায়। এ সময় ময়লা পানির দুর্গন্ধে পথচারীদের নাক-মুখ বন্ধ করেই ওই জায়গায় যাতায়াত করতে হয়।

আখলিমা বেগম নামের নারী বাসিন্দা জানান, এলাকায় ময়লা-আর্বজনা ও ড্রেন অপরিষ্কার থাকার কারণে মশার উপদ্রব অনেক বেশি। অনেক সময় দিনের বেলাও মশার কয়েল ব্যবহার করতে হয় বলে জানান তিনি।

এদিকে ভিআইপি এলাকা হিসেবে পরিচিত ওই ওয়ার্ডে মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারীদের আনাগুনাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়াও ওয়ার্ডে নেই কোনো পাবলিক টয়লেট। তাই স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি অফিসের টয়লেটই পথের লোকজনের একমাত্র ভরসা। এছাড়া যেখানে সেখানে প্রস্রাব-পায়খানা করায় পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

ওয়ার্ডের সমস্যাগুলোর ব্যাপারে জানতে চাইলে কাউন্সিলর ওয়াহিদুল হাসান মিল্টন বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, ওয়ার্ডবাসীকে সঙ্গে নিয়েই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক সমস্যা সমাধান হয়েছে। বাকি সমস্যাগুলো খুব দ্রুত সমাধান করা হবে।

 

টাইমস/ কেআরএস/এইচইউ

Share this news on: