‘রমণীরা আপনারা নাচেন, আমি দেখি’

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ছাত্রীদের নাচের প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম তালুকদার মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় প্রধান বরাবর একটি অভিযোগপত্র দিয়েছে।

বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানায়, আগামী ১ মার্চ ইংরেজি বিভাগের পুনর্মিলনী। এ উপলক্ষে ৯ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) সন্ধ্যা ৭টায় একাডেমিক ভবন-ই এর ৪১৯ নম্বর কক্ষে ছাত্রীরা নাচ-গানের অনুশীলন করছিল। ছাত্রীদের অভিযোগ, অনুশীলনের সময় তাদের টাকার বিনিময়ে নাচের প্রস্তাব দেন শিক্ষক মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন। যদিও তিনি এই অনুশীলনে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, ওই দিন ছাত্রীদের অনুশীলন কক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষক মিসবাহ মেয়েদের উদ্দেশ্য করে বলেন, রমণীরা আপনারা নাচেন, আমি দেখি। এ সময় ওই শিক্ষকের সঙ্গে আসা একজনকে ইঙ্গিত করে ছাত্রীদের তিনি বলেন, আজ কিন্তু এই অতিথির পকেট খুব গরম।

টাকা হাতে নিয়ে শিক্ষক মিসবাহ আরও বলেন, আজ আপনাদের নাচের অঙ্গভঙ্গি, তাল ও লয়ের প্রতিটি মুদ্রায় একটা করে মুদ্রা উড়াব আমি। এ সময় উপস্থিত এক শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করে বলেন, এটা তো আমাদের জন্য অপমানজনক। আমরা নাচি, কারণ নাচ একটা শিল্প। আমরা টাকার জন্য নাচি না। মতলববাজ ওই শিক্ষক টাকা উড়িয়ে বলেন, এভাবে টাকা উড়ানোও একটা শিল্প। টাকা এভাবে যাবে আবার আসবে।

অভিযুক্ত ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তালুকদার মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, আমি মজার ছলে কিছু কথা বলে ছিলাম। শিক্ষার্থীরা ব্যাপারটা অন্যভাবে নেবে আমি বুঝতে পারিনি। তবে নাচের অনুশীলনে টাকা ছড়ানোর বিষয়টা একেবারেই ভিত্তিহীন।

ইংরেজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হিমাদ্রী শেখর রায় বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইংলিশ কাউন্সিলের মিটিংয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে ওই ব্যাচের কোর্স থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে ওই শিক্ষক ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।

বিশ্ববিদ্যালয় যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী এ প্রতিবেদককে বলেন, আপনার মুখে আমি প্রথম শুনছি। বিষয়টি ইংরেজি বিভাগ আমাদের না জানিয়ে ঠিক করেনি। তিনি বলেন, এ ঘটনা যদি সত্য হয় তাহলে ওই শিক্ষক তার শিক্ষকতা করার যোগ্যতা হারিয়েছেন।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: