ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই বিদেশ পাঠাতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি ভালো করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পাঠাতে হবে। বিদেশের খেলোয়াড়রা যখন বাংলাদেশে আসে তখন তাদের যথাযথ নিরাপত্তা দেয়া হয়।

শনিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধনের সময় এ কথা বলেন তিনি। মসজিদে হামলার কারণে নিউজিল্যান্ড সফর সংক্ষিপ্ত করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল শনিবার রাতে দেশে ফিরে আসছে।

শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে জুমার নামাজ আদায়রত মুসল্লিদের ওপর স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে হামলা চালান ব্রেন্টন। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে বেঁচে যান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা। কাছাকাছি লিনউড মসজিদে দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়। দুই মসজিদে হামলায় নিহত ৪৯ জন। এই হামলায় ক্রিকেটাররা অক্ষত থাকলেও তিনজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে শুকরিয়া আদায় করি। আমাদের ক্রিকেট খেলোয়াড়, তাদের এই মসজিদে নামাজ পড়তে যাবার কথা ছিল, তারা গিয়েছিলও। একজন আহত নারী তাদের ঢুকতে দেয়নি।’

‘আগামীতে তাদের যেখানে খেলতে পাঠাব, তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পাঠাব। কারণ আমাদের দেশে যারা খেলতে আসে, তাদের আমরা যথাযথভাবে নিরাপত্তা দিই।’

মসজিদে এই হামলার নিন্দা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ধরনের ঘৃণ্য ঘটনা- যেটা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী ঘটনা। যেভাবে একটা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ঢুকে মানুষ সেখানে নামাজে ছিল তখন সেখানে তাদের গুলি করে হত্যার মতো জঘন্য কাজ আর কিছু হতে পারে না।’

‘আমি চাই সমগ্র বিশ্ববাসী শুধু এই ঘটনার নিন্দাই প্রকাশ করবে না, সন্ত্রাস যাতে চিরতরে বন্ধ হয় সেই ব্যবস্থা নেবে। যারা জঙ্গি-সন্ত্রাসী, তাদের কোনো ধর্ম নাই, জাতি নাই, দেশও নাই। তারা সন্ত্রাসী, তাদের সন্ত্রাসী হিসেবে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের সাফল্যের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে আমাদের দেশকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের থেকে রক্ষা করতে পেরেছি।’

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দ্বিতীয় কাচপুর সেতু, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতায় চার লেইনের ফ্লাইওভার এবং লতিফপুর রেলওয়ে ওভারপাস উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে শেখ হাসিনা নাগরিকদের ট্রাফিক আইন মেনে চলার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, ‘রাস্তায় নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে। ভবিষ্যতে কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটা তদন্ত করে দেখা হবে।’

সড়কে প্রতিযোগিতা করে গাড়ি না চালাতেও চালকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। দূরপাল্লার গাড়ির চালকদের জন্য বিশ্রামের স্থান রাখতেও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ও গওহর রিজভী, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশে জাইকার প্রধান প্রতিনিধি হিতোশী হিরাতা, ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াশু ইজোমি।

 

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: