বুধবার সকাল পর্যন্ত নর্দ্দায় ছাত্রদের অবরোধ স্থগিত

বাসচাপায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকার নর্দ্দায় যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে চলা বিক্ষোভ আজকের মতো তুলে নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে পুলিশ, ওই এলাকার কাউন্সিলর ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষে অনুরোধে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।

বিইউপি সহকারী রেজিস্ট্রার মাকসুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পুলিশ, ওই এলাকার কাউন্সিলর ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষে অনুরোধে শিক্ষার্থীরা আজকের  মতো আন্দোলন স্থগিত করেছে। 

বিইউপির শিক্ষার্থীরা জানান, আজকের মতো আন্দোলন স্থগিত করা হলেও বুধবার সকাল ৮টা থেকে আবারও আন্দোলন শুরু হবে। একই সঙ্গে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ এলাকা থেকে আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান তারা।

অবরোধ উঠিয়ে নেয়ায় সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে প্রগতি সরণিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটের সুপ্রভাত বাসের চালক অন্য একটি বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পারাপাররত আবরারকে প্রথমে ধাক্কা ও পরে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ওই বাস এবং চালককে আটক করেছে পুলিশ।

দুর্ঘটনার পর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের রাস্তা অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচার দাবিতে এই বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র আতিকুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময়  শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বেশকিছু দাবি তুলে ধরা হয় মেয়রের কাছে। তার আশ্বাসেও শিক্ষার্থী রাস্তা ছাড়েননি।

আবরারের মৃত্যুর খবর পেয়ে বিইউপির শিক্ষার্থীরা যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়ক অবরোধ করে দোষী চালকের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের অবরোধের কারণে বাড্ডা নতুনবাজার থেকে কুড়িলের পথে দুই দিকেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা এ সময় কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুরও করেন। দুপুর আড়াইটায়ও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছিল।

শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে- আবরারকে চাপা দেওয়া বাসের চালককে ১০ দিনের মধ্যে ফাঁসি দিতে হবে, সুপ্রভাত বাসের রুট পারমিট বাতিল, সিটিং সার্ভিস বন্ধ, স্টপেজের ব্যবস্থা করা, চালকদের ছবি ও লাইসেন্স গাড়িতে ঝোলানোর ব্যবস্থা করা, বসুন্ধরা গেইটে ফুটওভার ব্রিজের ব্যবস্থা করা, প্রতিটি জেব্রা ক্রসিংয়ে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা এবং ট্রাফিক পুলিশের দুর্নীতি বন্ধ করা।

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে মেয়র আতিকুল বলেন, ‘৭ দিন হয়েছে আমি দায়িত্ব নিয়েছি।  আমি মেয়র নই, ভাই হিসেবে বলছি আমাকে সময় দেন।’

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোকে ‘যৌক্তিক’ উল্লেখ করে তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তোমরা আমার সঙ্গে থাকলে আমি সব সমস্যার সমাধান করে ফেলব।  বাসের মালিক ও সংশ্লিষ্টদের নিয়মের ভেতরে আনা হবে। ঢাকা সিটিতে ছয়টি কোম্পানির বাস চালানো হবে। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সমাধান করব।’

সুপ্রভাত বাসের চালকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি। দুই-তিন মাসের মধ্যে নিহত আবরারের নামে বসুন্ধরা গেইটে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে  বলেও জানান তিনি। এরপর মেয়র রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তাদের তোপের মুখে এক পর্যায়ে সেখান থেকে চলে যান মেয়র।

 

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: