ইউরোপে মানব পাচারে জড়িত দুটি চক্র শনাক্ত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

অবৈধ উপায়ে ইউরোপ পাঠানোর সঙ্গে জড়িত দুটি চক্রের হদিস পেয়েছে সরকার। মানব পাচারে যুক্ত নোয়াখালীর তিন ভাইয়ের একটি চক্র ও মাদারীপুরের দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।

তিউনিসিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে ৩৯ জন নিখোঁজ ব্যক্তির নাম–পরিচয় পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে বুধবার সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।

১৪ যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে চারজনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে, তাদের একজন বাংলাদেশি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি হলেন শরীয়তপুরের নড়িয়ার উত্তম কুমার দাস। তিনি গৌতম দাসের ছেলে। ছবি পাঠিয়ে তার ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে উত্তম কুমারের পরিচয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গত বৃহস্পতিবার দুটি নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর হয়ে প্রায় ১৩০ জন ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেন। এতে ১০০ জন ছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক। এর মধ্যে একটি নৌকা নিরাপদে পৌঁছে যায় বলে জানা গেছে। অন্যটিতে ৭০ থেকে ৮০ জন ছিলেন। এই নৌকাটি দুর্ঘটনায় পড়ে।

উদ্ধার করা ১৪ জনের মধ্যে চারজন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এই চারজনের মধ্য দুজনের শরীরের বড় অংশ আগুনে পুড়ে গেছে। কারণ, এরা তেলে ড্রাম ধরে ভূমধ্যসাগরে সাত থেকে আট ঘণ্টা ভেসে ছিলেন। অন্য দুজন আঘাতের কারণে আহত হয়েছেন। অন্য ১০ জন তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্টের আশ্রয়শিবিরে আছেন।

বাংলাদেশের এসব নাগরিক চার থেকে পাঁচ মাস আগে লিবিয়া গেছেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।

তিনি বলেন, লিবিয়া যাওয়ার আগে দুবাই, শারজা, আলেকজান্দ্রিয়া হয়ে ত্রিপোলিতে পৌঁছান তারা। লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে পৌঁছার পর মানব পাচারকারীরা তাদের আটকে রেখেছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তাদের মারধর করে বাংলাদেশের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন মানব পাচারকারীরা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মানব পাচারের সঙ্গে যুক্ত নোয়াখালীর তিন ভাইয়ের একটি চক্র ও মাদারীপুরের দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া বৃহত্তর সিলেট থেকে যারা গেছেন, তাদের পরিবারের সদস্যরা বেশ কিছু দালালকে চিহ্নিত করেছেন।

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে ২৭ বাংলাদেশির পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। গত সোমবার রেড ক্রিসেন্টের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ব্যক্তিদের পরিচয় জানানো হয়।

তারা হলেন- নোয়াখালীর চাটখিলের নাসির, গাজীপুরের টঙ্গীর কামরান, শরীয়তপুরের পারভেজ, কামরুন আহমেদ, মাদারীপুরের সজীব, কিশোরগঞ্জের জালাল উদ্দিন ও আল-আমিন; সিলেটের জিল্লুর রহমান, লিমন আহমেদ, আবদুল আজিজ, আহমেদ, জিল্লুর, রফিক, রিপন, আয়াত, আমাজল, কাসিম আহমেদ, খোকন, রুবেল, মনির, বেলাল ও মারুফ; সুনামগঞ্জের মাহবুব, নাদিম ও মাহবুব এবং মৌলভীবাজারের শামিম ও ফাহাদ।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: