বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের পর এমন অনেক হত্যা মামলার কথা বেরিয়ে আসছে, যেগুলোর বিচার বছরের পর বছর ধরে চলছে।
তেমনি একটি হত্যাকাণ্ড ঘটে ঢাকার শেওড়াপাড়ায় ২০০০ সালের ২০ মে। সেদিন স্ত্রীর সামনেই বাসার ভেতর যুবক জায়েদ আকবর চৌধুরীকে হত্যা করে কয়েকজন দুর্বৃত্ত। সে সময়ের তুমুল আলোচিত সে হত্যাকাণ্ডের আজও কোনো বিচার হয়নি। জায়েদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন মাহফুজ মেহেদী নামে এক ব্যক্তি। ফেসবুক প্রোফাইলে দেয়া তথ্য মতে তিনি একজন বেসরকারি উন্নয়নখাত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং শিশু সাহিত্যিক।
নিচে তার স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো:
জায়েদ আকবর চৌধুরী। আমার বন্ধুর ছোট ভাই। এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় এসেছিল ভালো একটি কলেজে পড়াশোনা করতে। ছাত্র হিসেবে ছিল যেমন মেধাবী, তেমন বিনয়ী। কলেজে ভর্তি পরীক্ষার আগে কয়েক দিন অংক করিয়ে ছিলাম ওকে। সেই সুবাদে দারুণ মান্য করতো আমাকে। ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল যেদিন দিল সেদিন সোজা আমার অফিসে এসে পা ছুঁয়ে সালাম করে বসলো! আমি তো বুকে জড়িয়ে ধরেছিলাম ওকে। কিন্তু বেশি দিন রাখা গেল না।
নিজেই পছন্দ করে বিয়ে করেছিল যেই মেয়েকে, সেই মেয়েটিকে বিয়ের আগে থেকেই উত্ত্যক্ত করত মহল্লার কিছু বখাটে ছেলে। এদের একজন ছিল সরকারের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। ওদের যন্ত্রণা চলছিল বিয়ের পরেও। তাই বাধ্য হয়েছিল থানায় জিডি করতে। তাতেও শেষ রক্ষা হলো না।
২০০০ সালের ২০ মে রোববার। সকাল ১১টা। শেওড়াপাড়ায় চারতলার ভাড়া বাসায় ঘুমিয়ে ছিল জায়েদ। তিন-চারজন ছেলে এল। দরজায় নক করল। কিছু না বুঝেই জায়েদের বউ দরজা খুলে দিল। ঘুমন্ত জায়েদের মাথা পিঠে ৬টা গুলি করে সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেল ওরা। শত শত মানুষের মাঝ দিয়ে চলে গেল, যেন কোথাও কিছু হয়নি!
২০০০ থেকে ২০১৯। গত ১৯ বছরেও জায়েদ হত্যার বিচার শেষ হয়নি। তবে মূল হোতা যে, সে পুলিশের ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে নিজ বাসার সামনেই।
রিফাত হত্যাকারীদের বিচার কি হবে? নাকি এটাও থেকে যাবে জায়েদ হত্যার বিচারের মতোই অসম্পূর্ণ!
টাইমস/এমএস/এসআই