ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক-১ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়।
আদেশে বলা হয়, উপযুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, গত ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া যথাযথ না হওয়ায় এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে অধিকতর বিশ্বাসযোগ্য ও বিতর্কমুক্ত করে অধ্যক্ষ নিয়োগের লক্ষ্যে গভর্নিং বডিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।
নির্দেশপত্রে আরও বলা হয়, ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ বিষয়ে ইতিপূর্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের নিয়োগ কমিটির সদস্যদের ভবিষ্যতে এই প্রতিষ্ঠানে মতো কোনো স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নিয়োগ কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এর আগে নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে গত ২৯ এপ্রিল এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিভাগ।
পাঁচজনের ওই নিয়োগ কমিটি ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ পদে দুদকের বিতর্কিত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের স্ত্রী রুমানা শাহীন শেফার নিয়োগ চূড়ান্ত করেছিল।
অভিযোগ ওঠে, ৬০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে ভিকারুননিসার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হতে চেয়েছিলেন রুমানা শাহীন শেফা।
লিখিত পরীক্ষায় ৩০ নম্বরের মধ্যে মাত্র সাড়ে ৩ পান মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুমানা শাহীন শেফা।
অধ্যক্ষ নিয়োগের লক্ষ্যে ২৭ এপ্রিল সকালে লিখিত পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। নিয়োগ পরীক্ষায় মোট ১৫ জন প্রার্থীর অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও ১৩ জন উপস্থিত ছিলেন। মোট ১০ জন প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
তাদের মধ্যে রুমানা শাহীন শেফাকে ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়, যিনি লিখিত পরীক্ষায় মাত্র সাড়ে ৩ নম্বর পেয়েছেন। তবে মৌখিক পরীক্ষায় ও একাডেমিক পারফরমেন্সের মাধ্যমে তাকে পরীক্ষায় প্রথম করা হয় বলে অভিযোগ উঠে।
অভিভাবকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে।
এই তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) আহমদ শামীম আল রাজি। বাকি দুই সদস্য হলেন– ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক হারুনুর রশীদ ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. আনোয়ারুল আউয়াল খান। তারা সরেজমিনে তদন্ত করে জুনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইনের কাছ তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেন। সেই তদন্তের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার এ ব্যবস্থা নেয়া হলো।
টাইমস/এসআই