৫ দিনের চীন সফর শেষে দেশের পথে প্রধানমন্ত্রী

চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং’র আমন্ত্রণে ৫ দিনের সরকারি সফর শেষে শনিবার সকালে দেশের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে (বিজি-১৭২৩) স্থানীয় সময় সকাল ১১ টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীরা ঢাকার উদ্দেশে চীন ত্যাগ করেন। বিমানবন্দরে শেখ হাসিনাকে বিদায় জানান চীনের ভাইস পররাষ্ট্রমন্ত্রী লু ঝায়োহু, উপস্থিত ছিলেন দেশটিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ফজলুল করিম।

বিমানটির বাংলাদেশ সময় অপরাহ্নের পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

চীন সফর নিয়ে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, সোমবার বিকাল ৪টায় গণভবনে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে।

চীন সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং’র সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি চীনের দালিয়ান শহরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সভায় যোগদান করেন এবং ‘কোঅপারেশন ইন দি প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং’র সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে মিয়ানমারকে বোঝানোর বিষয়ে বেইজিং ঢাকাকে আশ্বস্ত করে।

বেইজিং অবস্থানকালে শেখ হাসিনা কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার (সিপিসি) মিনিস্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স সং তায়ো’র সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এ সময় সিপিসি মিনিস্টার প্রলম্বিত রোহিঙ্গা সমস্যাটি সমাধানের বিষয়ে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুকি এবং মিয়ানমারের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তার দলের আলোচনার বিষয়ে শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে ঢাকা এবং বেইজিং’র মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সংক্রান্ত ৯টি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ৪ জুলাই চীনা প্রধানমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন সিপিসি’র কার্যালয় গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিংয়াং এর সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শেষে দুই নেতার উপস্থিতিতে এই চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয়।

যার মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তার জন্য এলওসি (লেটার অব এক্সচেঞ্জ) এবং অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ, সংস্কৃতি এবং পর্যটন সংক্রান্ত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক ।

দুই দেশের মধ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য খাদ্য সহায়তা সংক্রান্ত এলওসি স্বাক্ষরিত হয়। এর আওতায় মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য চীন ২ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করবে বলে পররাষ্ট্র সচিব মো.শহীদুল হক জানান।

স্বাক্ষরিত অন্য দলিলগুলো হচ্ছে-

১. রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য সাহায্য সংক্রান্ত এলওসি।

২. সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পর্যটন কর্মসূচি নিয়ে সমঝোতা স্মারক।

৩. ইয়ালু ঝাংবো ও ব্রহ্মপুত্র নদীর তথ্য বিনিময় সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক ও তা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা।

৪. ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ নিয়ে ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট ।

৫. বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে অর্থনীতি ও কারিগরি সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি।

৬. ইনভেস্টমেন্ট কোঅপারেশন ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা নিয়ে সমঝোতা স্মারক।

৭. পিজিসিবি প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুৎ গ্রিড নেটওয়ার্ক জোরদার প্রকল্পের জন্য ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট।

৮. ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ নিয়ে গভর্নমেন্ট কনসেশনাল লোন এগ্রিমেন্ট।

৯. ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ নিয়ে প্রিফারেনশিয়াল বায়ার্স ক্রেডিট লোন এগ্রিমেন্ট।

শেখ হাসিনা গত ১ জুলাই ৫ দিনের সরকারি সফরে ঢাকা থেকে চীনে এসে পৌঁছান।

 

টাইমস/এসআই

 

Share this news on: