স্যার, আমি জাহালম। আমি আবু সালেক না…আমি নির্দোষ।’ আজ থেকে তিন বছর আগে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বিচারকের উদ্দেশে এই কথা বলেছিলেন তিনি।
দুদকের ভুলে আবু সালেকের জায়গায় জাহালমকে বিনা দোষে তিন বছর কারাগারে থাকতে হয়। শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের সেই দোষ স্বীকার করে নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)।
বৃহস্পতিবার বিচাপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে দুদকের পক্ষ থেকে ভুল স্বীকার করে ২৪ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন দাখিলের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বলেন, সঠিক ঘটনা তথা সত্য উদ্ঘাটন করে আদালতের কাছে উপস্থাপন করা তদন্ত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তা বা অন্য কারও ওপর এই দায়িত্ব অর্পণের কোনো সুযোগ নেই।
দুদকের আইনজীবীর সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আগামী মঙ্গলবার বেলা দুইটায় শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।
আইনজীবী খুরশিদ আলম খান দুদকের পক্ষে এবং জাহালমের পক্ষে আ্যডভোকেট আসাদুজ্জামান শুনানিতে অংশ নেন।
প্রতিবেদনে দুদক দোষ স্বীকার করে বলে, ‘তদন্ত কর্মকর্তা, সরকারের পিপির সঙ্গে সমন্বয়হীনতার অভাবে এ ভুলের ঘটনা ঘটেছে।’
এর আগে জাহালমকে কেন ক্ষতি পূরণ দেয়া হবে না এ মর্মে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।
‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না…’ গণমাধ্যমে এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুদকের মামলার মূল আসামি হচ্ছে আবু সালেক। যার বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে টানা তিন বছর জেল খেটেছেন এই জাহালম। তিনি পেশায় পাটকলশ্রমিক।
ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপনের পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট। এ বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি মুক্তি পান।
টাইমস/এসআই