‘মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে’

 

জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে ফেরত নিতে হবে। খবর বাসস।

সোমবার বিকেলে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি-এনিক বুর্দিন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন। এ সময় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

বৈঠকের পর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন-প্রক্রিয়া অবশ্যই শুরু করতে হবে। আমরা আর কত দিন এ বোঝা বহন করব? রোহিঙ্গাদের যত তাড়াতাড়ি প্রত্যাবাসন করা হবে, তা সবার জন্য হবে মঙ্গলজনক।’

শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘ সংস্থাগুলো বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে তাদের জন্য ঘরবাড়ি নির্মাণসহ মিয়ানমারের ভেতরে কাজ করতে হবে। কক্সবাজারে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের সংখ্যা স্থানীয়দের সংখ্যা থেকে ছাড়িয়ে গেছে। ইতিমধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নিয়েছে।

জবাবে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত তার দেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা এই ইস্যুতে শুরু থেকেই বাংলাদেশকে সহায়তা শুরু করেছি এবং এটি অব্যাহত থাকবে।’

তবে মারি-এনিক বুর্দিন বলেন, বর্তমানে মিয়ানমারের অবস্থা রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার অনুকূল নয়। রাষ্ট্রদূত জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ফ্রান্সের ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলেও উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ কার্বন নিঃসরণে খুবই দায়ী হলেও দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম।

তিনি বলেন, দেশের উপকূলীয় জেলাগুলো জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, তার সরকার জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এক হাজার কোটি টাকা দিয়ে একটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ট্রাস্ট তহবিল গঠন করেছে।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমরা উপকূলীয় একটি সবুজবেষ্টনী গড়ে তুলব।

প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে প্রথম বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ শুরু করেছিলেন।

শেখ হাসিনা বিদায়ী রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে সফলভাবে তার দায়িত্বের মেয়াদ সম্পন্ন করার জন্য অভিনন্দন জানান এবং দুদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার ও সম্প্রসারিত করার ক্ষেত্রে তার প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের প্রশংসা করেন।

রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন বাংলাদেশের জনগণ ও কর্মকর্তারা খুবই আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

 

টাইমস/জেডটি

Share this news on: