১৯৯৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন মাসুমা খাতুন। কিন্তু পরীক্ষার আগেই তার বিয়ে হয়ে যাওয়ায় নতুন সংসারে গিয়ে তার আর পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি। কিন্তু দমে যাওয়ার পাত্রী নন মাসুমা খাতুন। ২০১৭ সালে নিজের মেয়ের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উর্ত্তীণ হন তিনি।
তারপর মাসুমা খাতুন ভর্তি হন নাটোরের বাগাতিপাড়া পৌর মহিলা বিএম কলেজে। আর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ভর্তি হন রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজে। ২০১৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মা-মেয়ে দুজনেই উত্তীর্ণ হয়েছেন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মাসুমা খাতুন পেয়েছেন জিপিএ-৪.১৩। আর তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পেয়েছেন জিপিএ-৫।
মাসুমা খাতুনের বাবার বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলার বারইপাড়া গ্রামে। বিয়ে হয় বাগাতিপাড়া উপজেলা সদরে। স্বামী আব্দুল মজিদ আনসার ব্যাটালিয়নে সিপাহি (প্রশিক্ষক) পদে চাকরি করেন। মাসুমা খাতুনের দুই সন্তানের বড় ছেলে বনি আমিন বাগাতিপাড়া সরকারি ডিগ্রী কলেজের স্নাতক শ্রেণীর ছাত্র।
মাসুমা খাতুন বলেন, ‘বিয়ের ২৮ বছর পেরিয়ে গেছে। পিঠাপিঠি দুই ছেলে-মেয়েকে মানুষ করতে গিয়ে নিজের পড়ার কথা ভাবারই সময় পাইনি। অবশেষে ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে নতুন করে পড়ালেখা শুরু করেছি। সমাজে আর দশটা মানুষের মতো নিজেকেও একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে যাতে পরিচয় দিতে পারি, সে কারনেই এই বয়সে কষ্ট করে লেখাপড়া করছি’।
টাইমস/এইচইউ