সিলেট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

সিলেট সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাসিমা হক খানের বিরুদ্ধে অশোভন আচরণ, নানান ধরনের অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতাসহ বিধিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে।

অধ্যক্ষ নাসিমা হকের বিরুদ্ধে নানান ধরনের অপকর্ম ও অনিয়মের অভিযোগ এনে কলেজটির শিক্ষকরা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালকের কাছে চিঠিও দিয়েছেন। ১৫ মার্চ এ চিঠি দেয়া হয়। চিঠিতে সিলেট সরকারি কলেজের বিভিন্ন বিভাগের ১৪ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা স্বাক্ষর করেন।

চিঠিতে বলা হয়, কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাসিমা হক খান সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন সংযুক্ত কর্মকর্তা। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই সহকর্মীদের সাথে শিষ্টাচারবর্জিত, মানহানিকর, অশোভন আচরণসহ বিধিবহির্ভূত নানা অনিয়মের সাথে জড়িত রয়েছেন। গত ডিসেম্বর মাসে কলেজের শিক্ষক পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু বারবার অনুরোধ করার পরও শিক্ষক পরিষদ নির্বাচনের কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না অধ্যক্ষ।

এ অভিযোগ প্রসঙ্গে নাসিমা হক খান বাংলাদেশ টাইমস'কে বলেন, ’আমি নিয়ম মেনেই কলেজ পরিচালনা করছি। শিক্ষক পরিষদের নির্বাচনের জন্য সভা ডাকা হলেও শিক্ষকরা এতে অংশ নেন না। তাই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না।'

শিক্ষকদের লেখা চিঠিতে আরো বলা হয়, কলেজ পরিচালনা সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী পরীক্ষা পরিচালনা কমিটিসহ অন্য কমিটিগুলোতে সকল শিক্ষককে পর্যায়ক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার বিধান রয়েছে। কিন্তু অধ্যক্ষ এ নিয়ম মানছেন না। তিনি তার পছন্দের কয়েকজন শিক্ষককেই বারবার বিভিন্ন দায়িত্ব দিচ্ছেন। অধ্যক্ষের সবচেয়ে আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. ফজলুর রহমান। তাকে একাধারে মেরামত কমিটি, দরিদ্র তহবিল কমিটি, বাগান উন্নয়ন কমিটি, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি, উন্নয়ন তহবিল ও বিবিধ তহবিল সংক্রান্ত কমিটি এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় স্টাডি সেন্টারের আহ্বায়ক ও সমন্বয়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এতে অন্য শিক্ষকগণ নিজেদের মেধা ও দক্ষতাকে কাজে লাগানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এ বিষয়ে নাসিমা হক বলেন, 'কলেজের কিছু শিক্ষক উৎস করের টাকা দেন নাই। তাই ঐ সকল শিক্ষকগণকে অর্থবিষয়ক বিভিন্ন কমিটিতে রাখা হয় না।'

চিঠিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন যাবৎ কলেজের একাডেমিক কাউন্সিল ও শিক্ষক পরিষদের কোনো সভা হচ্ছে না। কলেজ পরিচালনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিল ও শিক্ষক পরিষদের সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিধান রয়েছে। কিন্তু এসব নিয়ম না মেনে অধ্যক্ষ নিজের ব্যক্তিগত খেয়াল খুশিমতো কলেজ পরিচালনা করছেন।

এ অভিযোগ প্রসঙ্গে নাসিমা হক বাংলাদেশ টাইমস'কে বলেন, 'নিজের ব্যক্তিগত ইচ্ছায় নয়, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কলেজ পরিচালনা করছি।'

চিঠিতে আরো বলা হয়, বৈশাখ উদযাপন সংক্রান্ত এক প্রস্তুতিমূলক সভায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাসিমা হক খান শিক্ষকদের ‘কুকুর-বিড়াল’ বলে সম্বোধন করেছেন। তিনি প্রতিনিয়ত এক সহকর্মীর নিকট অন্য সহকর্মীদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়ে মিথ্যা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও কুৎসা রটনা করেন। যা তার অভ্যাসগত আচরণে পরিণত হয়েছে।

এ অভিযোগ প্রসঙ্গে নাসিমা হক খান বাংলাদেশ টাইমস'কে বলেন, 'কলেজের কিছু শিক্ষক আমার কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে অনৈতিক সুযোগ সুবিধা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুৎসা রটনা করছেন। এই চিঠি তারই অংশ। এই চিঠির সমস্ত তথ্য ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।'

 

টাইমস/টিএইচ/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দূষণের কারণে বছরে পৌনে ৩ লাখ বাংলাদেশির মৃত্যু Mar 28, 2024
img
আইএমএফের হিসাবে দেশের রিজার্ভ এখন কত, জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক Mar 28, 2024
img
প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত Mar 28, 2024
img
বিশ্বে প্রতিদিন ১০০ কোটি টন খাবার নষ্ট হয় : জাতিসংঘ Mar 28, 2024
img
জাহাজসহ জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে সরকার অনেক দূর এগিয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী Mar 28, 2024
img
ঢাবির কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ফল প্রকাশ, ৮৯.৯৩ শতাংশ ফেল Mar 28, 2024
img
একনেকে ৮ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন Mar 28, 2024
img
রাজসিক সংবর্ধনায় দায়িত্ব নিলেন বিএসএমএমইউ'র নতুন উপাচার্য Mar 28, 2024
img
রোদে পোড়া ত্বকের যত্নে হলুদের ঘরোয়া প্যাক Mar 28, 2024
img
শহরের চেয়ে গ্রামে বিয়ে-তালাক বেশি Mar 28, 2024