রাজশাহীতে ঘুষের টাকা ভাগ করার সময় আটক ৭

রাজশাহী নগরীর উপশহরের সোনামসজিদ স্থলবন্দরের রাজস্বের টাকা ফাঁকি দেয়ার ঘটনায় এক কাস্টমস কর্মকর্তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ঘুষের টাকা, ডলার ও অস্ত্রসহ ৭জনকে আটক করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

বুধবার রাতে ডিবি-ডিসি আবু আহাম্মেদ আল মামুনের নেতৃত্বে ডিবির একটি দলের এক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে।

আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন - আবু সাইদ নয়ন, আহসান কবির মিঠু, মনিরুল ইসলাম জুয়েল, বায়েজিদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, আবু হাসান রুবেল ও আব্দুল মালেক। আটককৃত ব্যক্তিদের অধিকাংশই সোনামসজিদ স্থলবন্দরে কর্মরত সিঅ্যা-এফ এজেন্ট।

তবে, অভিযানের বিষয়টি বুঝতে পেরে কয়েকজন কাস্টমস কর্মকর্তা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানা গেছে। আটককৃতদের কাছ থেকে ঘুষ ভাগাভাগির ৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা, সাত হাজার ডলার ও একটি রিভলভার জব্দ করা হয়েছে।

গোয়েন্দা পুলিশের সূত্র মতে, আটককৃতদের মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মামলা দায়েরের পর তাদের আদালতে পাঠানো হবে।

অভিযোগে জানা গেছে, আটককৃতরা সোনামসজিদ স্থলবন্দরের মাধ্যমে বিভিন্ন আমদানি পণ্যে শুল্ক ফাঁকিতে নিয়োজিত একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের সদস্য। শুল্ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসছিল।

বুধবার মনিরুল ইসলাম জুয়েলের লাইসেন্সে দুই ট্রাক ভারতীয় প্রসাধনী সামগ্রী আসে। এতে মোট ৮০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাত্র ২০ লাখ টাকা দিয়ে ট্রাক দুটি বন্দর থেকে ছাড়িয়ে নেয়া হয় তড়িঘড়ি করে। শুল্ক কর্মকর্তাদের ঘুষের জন্য তোলা ২০ লাখ টাকা রাজশাহীতে আনা হয়।

ওই টাকা শুল্ক কর্মকর্তাদের মাঝে ভাগ করার জন্য ওই দিন রাত ৯টায় কাস্টমস গোয়েন্দার সুপারিটেন্ড্যান্ট আইয়ুব আলীর উপশহরের ১৭১ নম্বরের বাসায় জড়ো হন তারা। এরপর ভাগ-বাটোয়ারা শেষে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তারা বাসাটি ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময় পুলিশ তাদের আটক করেন।

পুলিশ আরো জানায়, সোনামসজিদ স্থলবন্দরে রাজস্ব ফাঁকির টাকা প্রায় প্রতিরাতেই কাস্টমস কর্মকর্তা আইয়ুব আলীর রাজশাহীর বাসায় আনা হতো এবং সেখান থেকেই ভাগ বাটোয়ারা হয়ে আসছিল। কাস্টমস কর্মকর্তা আইয়ুব আলী ঘুষের টাকার ভাগাভাগি সমন্বয় করে আসছিলেন। আইয়ুব আলী রাজশাহী বিভাগীয় কাস্টমস সদর দপ্তরে কর্মরত। তবে সম্প্রতি বিষয়টি টের পেয়ে গোয়েন্দা নজরদারি চলছিল বাড়িটিসহ সংশ্লিষ্টদের ওপর।

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সোনা মসজিদ স্থল বন্দরের প্রায় ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এভাবেই ভাগাভাগি হয়ে যায়। ফলে রাজস্ব বঞ্চিত হয় সরকার।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: