স্ত্রীর নয়, আমার অফিসের মোবাইল পানিতে পড়েছিল: মাদারগঞ্জ ইউএনও

বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে সেলফি তোলার সময় স্ত্রীর স্মার্টফোন পানিতে পড়ে যাওয়া ও তা উদ্ধারে একজন ডুবুরিসহ ছয় ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তার কয়েক ঘণ্টা চেষ্টার যে খবর গণমাধ্যমে বেরিয়েছে তা পুরোপুরি সত্য নয় বলে দাবি করেছেন জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) আমিনুল ইসলাম।

শনিবার বিকালে বাংলাদেশ টাইমসকে মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয় এক সাংবাদিক আমার স্মার্টফোন হারানো প্রসঙ্গে ভুল সংবাদ প্রচার করেছে। পানিতে পড়ে যাওয়া স্মার্টফোনটি আমার অফিসিয়াল কাজে ব্যবহারের জন্য। এটা আমার স্ত্রীর নয়।’

প্রকৃত ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ইউএনও আমিনুল ইসলাম বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ছয়টার দিকে আমার উপজেলার সবচেয়ে দূরবর্তী ইউনিয়ন সিধুলী ইউনিয়নের চরলোটাবর গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে যাই। আমার স্ত্রী যেহেতু বাসায় একা থাকে তাকে বললাম তুমিও আমার সঙ্গে চলো।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই গ্রামে নতুন একটি ব্রিজ হয়েছে সেখানে একটু থামলাম। তখন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা কিংবা পৌনে ৮টা হবে। আমরা তখন কথা বলছিলাম। আমার হাতে তখন অফিসের একটি ও আমার ব্যক্তিগত একটি স্মার্টফোন। আচমকা অফিসের স্মার্টফোনটি হাত থেকে পড়ে যায়। আশ্চর্যজনকভাবে মোবাইলটি ব্রিজের ওপর না পড়ে বন্যার পানিতে পড়ে যায়। পানিতে ছিল প্রচণ্ড স্রোত। আমার হাত কিন্তু রাস্তার দিকেই ছিল। মোবাইলটিতে গুরুত্বপূর্ণ সব ফোন নম্বর ছিল। আকস্মিক এই ঘটনায় কি করব বুঝতে পারছিলাম না। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলাম। কিছুক্ষণ পর আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে ফোন করে বিষয়টা জানাই।’

‘চেয়ারম্যান সাহেব বললেন, স্যার স্থানীয় কাউকে দিয়ে মোবাইল উঠাতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, আপনি ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। আমি মাদারগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানান, এখন তো সন্ধ্যা হয়ে গেছে আগামীকাল সকালে একজন ডুবুরিসহ লোকজন পাঠাব।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘পরদিন শুক্রবার সকালে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আমার অফিসের স্মার্টফোনটি উদ্ধার করেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান এ ঘটনায় খুশি হয়ে তাদের তিন হাজার টাকা উপহারও দেন। তিনি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের বলেন, তোমরা একটা অসাধ্য কাজ সাধন করেছ।’

পানিতে পড়ে যাওয়া স্মার্টফোনটি কোন মডেলের ছিল তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ফোনটি ছিল স্যামসাং গ্যালাক্সি সিরিজের একটা নরমাল মোবাইল। আমি মাদারগঞ্জে দায়িত্ব নেয়ার আগে থেকেই অফিসে এই মোবাইল ছিল। আমি এসে একই মোবাইল ব্যবহার করছি।’

তিনি বলেন, ‘স্থানীয় এক সাংবাদিক আমার সঙ্গে কথা না বলেই ভুল তথ্য উপস্থাপন করে এই সংবাদ প্রকাশ করেছে। মোবাইলটি আমার স্ত্রীর ছিল না, আমার অফিসের ছিল। গুরুত্বপূর্ণ ফোন নম্বর থাকাতেই ফায়ার সার্ভিস ডেকে মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়েছে।’

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: