চাঁদপুর সদর উপজেলায় একই পরিবারের চার সদস্যের মৃত্যুর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এই ভিডিওতে কথা বলতে দেখা গেছে ওই পরিবারের কর্তা নিহত মাইনুদ্দিন সরদারকে।
ওই ভিডিওতে সেসহ তার পরিবারের সবার মৃত্যুর জন্য শ্বশুর-শাশুড়িকে দায়ী করেছেন তিনি।
আরও জানতে...
দড়িতে স্বামী, পুকুরে স্ত্রীর, বিছানায় দুই সন্তানের লাশ
ভিডিওর কথাগুলো বাংলাদেশ টাইমস-এর পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো।
আমি তো মরে যাবো
চলে যাবো, রেখে যাবো সবি,
আছস নি কেউ সঙ্গের সাথী
সঙ্গে নি কেউ যাবি...
মরার সঙ্গে সঙ্গে পড়ে যাবে কান্নাকাটির ভিড়
সবাই মোরে মাটি দিতে হইবে অস্থির।।
আমরা যদি মরে যাই, আমাদের শ্বশুর-শাশুড়ি, শুমন্দি রহিম, আমার শ্বশুরের ভাই মেম্বার সাহেব উনাদের জন্য আমাদের এই পরিস্থিতি আজকে। এই যে আমার ছেলে কত সুন্দর, একটি ফুটফুটে বাচ্চা। সুন্দর বাচ্চার জন্য বাঁচতে চাইছি। কিন্তু বাঁচতে দিল না আমাদের। আমাদের সাথে যেমন ব্যবহার করছে, খারাপ আচরণ করছে। এই জিনিসগুলো আপনাদেরকে জানিয়ে রাখলাম।
আমার মায়ের এখানে কোন দোষ নাই। সব দোষ হলো আমার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি, উনার ভাই মেম্বার সাব, আমার শালা রহিম। উনাদের কারণে আজকে এই পরিস্থিতি আমাদের।
আমরা যদি বেঁচে থাকি তাহলে আবার দেখবেন। আর যদি মরে যাই, যদি মরে যাই..... যদি মরে যাই আমাদেরকে চাঁদপুর হাটেঁ নিতে মানা করবেন।
আমরা নিষ্পাপ, আমাদের মধ্যে কোন পাপ নাই। আর আমাদেরকে মাঁটি দিলে এইখানে দিতে বলিয়েন। এই যে এখানে আমার বাবার কবর মসজিদের পাশে। আপনাদের কাছে অনুরোধ আমাদের চারজনকে মাঁটি দিলে এখানে মাটি দিয়েন । সুন্দর করে মাটি দিতে বলিয়েন আমাদেরকে। চাঁদপুর হাটে যেন না নেয়। আমরা নিষ্পাপ, আমরা নিষ্পাপ, আমাদের মধ্যে কোন পাপ নেই।
খোদা যা করছেন, ভালোর জন্য করছেন। কিন্তু বাঁচতে দিল না। এই মসজিদের সামনে বলতেছি, আমাদেরকে বাঁচতে দিলো না। আমাদেরকে বাঁচতে দিলো না সুন্দর মতো তারা। আমার জীবনটারে ধ্বংস করে দিছে।
আপনাদের কাছে বলতেছি... আপনাদের কাছে রিকুয়েষ্ট করতেছি, আমাদের চারজনকে এখানে সুন্দরমত মাটি দিয়েন, এখানে এই কবর স্থানে। আমাদেরকে চাঁদপুর হাটে নিতে মানা করিয়েন। আমরা নিস্পাপ।
যদি দায়ী করতে চান, আমাদের শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে দায়ী করবেন। আমাদের চারজনকে সুন্দর মত গাঁও গোসল ধোয়ায়ে, সুন্দরমত এখানে মাটি দিয়েন আমাদেরকে। এই জিনিসটাই আপনাদের কাছে অনুরোধ, এখানে আমার বাড়ির কাছে মাটি দিয়েন।
আমার আর কোন কথা নাই। এই ভিডিওটা আমি ছাড়বো, যখন আমি এই দুনিয়া থেকে চলে যাব।
আমার ছেলে আছে সাথে। এই সুন্দর ছেলেটার দিকে তাকিয়ে, সুন্দর ভাবে বাঁচতে চাইছিলাম। কিন্তু ওনারা আমাদেরকে বাঁচতে দিল না।
আমি সবাইকে অনুরোধ করে রাখছি, আমার মার এখানে কোন দোষ নাই। আমার ভাই-বেরাদার কারোরই কোন দোষ নাই। সব দোষ আমার শ্বশুর-শ্বাশুড়ির। আজকে শ্বশুর-শ্বাশুড়ি যদি বলত, সুন্দর মতো থাক, সুন্দরমতো চল, সুন্দর মতো খাও। কোন জিনিসের তোদের অভাব। ওই কাজটা না করে ওনারা আমাদেরকে অপমানিত করেছে।
আপনাদের কাছে এইটুকুই অনুরোধ। আসসালামু ওয়া লাইকুম।
টাইমস/এইচইউ