বান্দরবানে ৫০ একর জমিতে জি কে শামীমের বিলাসবহুল রিসোর্ট

ক্যাসিনো বন্ধে র‌্যাবের অভিযানের মধ্যে শুক্রবার গ্রেপ্তার হন বহুল আলোচিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীম। এরপর যুবলীগ নেতা পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে সরকারি বিভিন্ন কাজ পাওয়ার অভিযোগ আসতে থাকে তার বিরুদ্ধে। এবার তার বিরুদ্ধে বান্দরবানে জমিদখল করে সিলভান ওয়াই রিসোর্ট এন্ড স্পা নামে তিন তারকা মানের একটি রিসোর্ট তৈরির অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, র‌্যাব সদর দপ্তর, সচিবালয় ও কয়েকটি হাসপাতালের নতুন ভবনসহ সরকারি অন্তত ২২টি নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদারি কাজ এখন শামীমের প্রতিষ্ঠান জিকে বিল্ডার্সের হাতে রয়েছে। এসব প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় দুইশ কোটি টাকা বিনিয়োগে বান্দরবান শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক সড়কের পাশে পর্যটন কেন্দ্র নীলাচল সংলগ্ন ছাইংঙ্গ্যা পাড়ায় প্রায় ৫০ একর এলাকাজুড়ে ‘সিলভান ওয়াই রিসোর্ট এন্ড স্পা’ নামে এই রিসোর্টটি তৈরি করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিসোর্টটি আটজন মিলে তৈরি করছেন। জিকে শামীমের সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলও এতে জড়িত। প্রথম পর্যায়ে ১০ কোটি টাকার বিনিয়োগে কাজ শুরু করেছেন তারা।

জমি ক্রয় সংক্রান্ত একটি সভার কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, জি কে শামীম ছাড়াও রিসোর্টের মালিকানায় রয়েছেন চট্টগ্রামের চন্দনাইশের এমপি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর ছোট ভাই জসিম উদ্দিন মন্টু, ফজলুল করিম চৌধুরী, জামিল উদ্দিন শুভ, এসএইচএম মহসিন, উম্মে হাবিবা নাসিমা আক্তার, জিয়া উদ্দিন আবির ও জাওয়াদ উদ্দিন আবরাব।

এর মধ্যে মন্টু চেয়ারম্যান, ফজলুল করিম ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জিকে শামীম ও শুভ উপব্যবস্থাপনা পরিচালক। রিসোর্টটিতে মন্টুর ৪ শতাংশ, জি কে শামীমের ২ শতাংশ ও অন্যদের ১ শতাংশ করে শেয়ার রয়েছে।

রিসোর্টে জিকে শামীমের অংশীদার জসিমউদ্দিন মন্টু রিসোর্টে মালিকানায় জিকে শামীমের থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নেন। ৫০ একর জমি কেনার কথাও বলেন তিনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই রিসোর্টের জন্য ৫০ একর জমি সংগ্রহের সময় অনেক পাহাড়িকে উচ্ছেদ করা হয়। জোরজবরদস্তি করে জমিদখল করা হয়। রিসোর্টের মালিকদের বিরুদ্ধে পাড়ার সীমানায় কাঁটাতার দিয়ে তাদের জমিদখলের পাশাপাশি হয়রানি ও চলাচলে বাধা দেয়ার অভিযোগও তুলেছেন স্থানীয়রা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলনের জেলা কমিটির সভাপতি জুয়ামলিয়াম আমলাই বলেন, জিকে শামীমের বিনিয়োগের টাকা পাহাড়ে পর্যন্ত গড়িয়েছে। রিসোর্ট করতে গিয়ে পাহাড়িরা ভূমি থেকে উচ্ছেদ হয়েছে। তাদের দৌরাত্ম্য ও ক্ষমতার কাছে প্রশাসনও একভাবে অসহায় মনে হচ্ছে।

এ বিষয়ে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত কমিটি করা হয়েছে এবং তদন্তের পরই প্রশাসন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

জি কে শামীমের অফিসে ছিল সুন্দরী নায়িকাদের ভিড়

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: