সরেজমিন ঢাকা-১৮: ভোটের মাঠে এগিয়ে নৌকা 

রাজধানীর ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ একটি আসন ঢাকা-১৮। সারা দেশের ন্যায় এই আসনেও বইছে নির্বাচনী হাওয়া। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা। তবে ওই প্রচারণায় ধানের শীষ প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী।

শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ওই আসনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এবং সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

জানা গেছে, রাজধানীর উত্তরখান, দক্ষিণখান, খিলক্ষেত, তুরাগ, উত্তরা ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১, ১৭, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৮, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয়েছে ঢাকা-১৮ আসন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৭১৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৮৬ হাজার ১৫৮ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৬৯ হাজার ৫৫৫ জন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন। ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বতী করছেন। এছাড়াও ওই আসনে ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকে নির্বাচন করছেন আনোয়ার হোসেন নামের একজন।

সরেজমিন ঢাকা-১৮ আসনে খিলক্ষেত, উত্তরা, দক্ষিণখান এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের পোস্টার সাটানো রয়েছে। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। তবে কোথাও নজরে পড়েনি ধানের শীষ কিংবা হাতপাখা প্রতীকের পোস্টার।

এলাকার সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রত্যেক এলাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষ থেকে নির্বাচনী কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নেতাকর্মীরা ওইসব কার্যালয়ে অবস্থান করেন। মাঝে মাঝে কার্যালয়গুলোতে বসে চায়ের আড্ডা। এছাড়াও বিকেল হলে ওইসব এলাকায় নিয়মিত চলে নৌকা প্রতীকের পথসভা, মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ। দলীয় নেতাকর্মীদের সাধারণ ভোটারদের কাছে তাদের প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন।

খিলক্ষেত বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, একটি নির্বাচনী পথসভা চলছে। মিছিল নিয়ে দলে দলে ওই সভায় দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত হচ্ছেন। এছাড়াও পথসভায় উপস্থিত হওয়া দলীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বক্তব্যের মাধ্যমে বিগত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের কথা সাধারণ ভোটারদের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

সেই সভায় আসা আব্দুল করিম নামের এক ভোটার বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতের সঙ্গে জড়িত। বিগত কয়েক দিন থেকেই তিনি দিন-রাত দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

দক্ষিণখানের বাসিন্দা রহিম উদ্দিন নামের আরেক ভোটার বলেন, তাদের এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাহারা খাতুনের প্রচারণা ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর প্রচারণা এখনো দেখা যায়নি। এমনকি বিএনপি বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে ওই আসনে কে নির্বাচন করছে সেটাও অধিকাংশ ভোটার জানেন না বলে জানান তিনি।

এদিকে, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ব্যাপক প্রচারণা দেখা গেলেও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর কোনো প্রচারণা চোখে পড়ে নাই। এছাড়াও ওই আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আনোয়ার হোসেনেও কোনো প্রচারণা চোখে পড়ে নাই। তবে তিনি বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার সাটিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করছেন। ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর পক্ষে এখনো পোস্টার সাটানো হয়নি।

তবে বিএনপি সমর্থকরা জানিয়েছেন, তাদের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। দিনে যারা নির্বাচনী প্রচারণা করেন, রাতের আধারে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ওই ভয়ে এখন আর কেউ নির্বাচনী প্রচারণায় নামছেন না। এমনকি গ্রেফতার আতঙ্কে তারা গণমাধ্যমে নাম প্রকাশ করে কোনো কথা বলতেও অপারগতা প্রকাশ করেছেন। 

 

টাইমস/কেআরএস/এইচইউ

Share this news on: