ভারতের কাছে ২০১১ বিশ্বকাপ ‘বিক্রি করেছে’ শ্রীলঙ্কা

২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। যা ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা সময়ের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু সে সব কিছুই নাকি ছিল পাতানো! এমনটাই দাবি করেছেন শ্রীলঙ্কার তৎকালীন ক্রীড়ামন্ত্রী মাহিনদানান্দা আলুথগামাগে। রাখঢাক না রেখে সরাসরিই বলেছেন, ভারতের কাছে ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল বিক্রি করেছে শ্রীলঙ্কা!

এমনই এক বিস্ফোরক মন্তব্যে পুরো ক্রিকেট বিশ্বের মনোযোগের কেন্দ্রে এখন লঙ্কানদের তৎকালীন ক্রীড়া মন্ত্রী মাহিন্দানন্দ আলুথাগমাগে। তার এমন অভিযোগে চটে নিজেদের টুইটার অ্যাকাউন্টে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৎকালীন লঙ্কান দলের অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা আর সহ-অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনে।

২০১১ বিশ্বকাপের যে যাত্রাটা শুরু হয়েছিলো মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে, ট্রফি হাতে ওয়াঙ্খেড়ে স্টেডিয়ামে তার শেষটা রাঙ্গিয়েছিলো ভারত। ফাইনাল ম্যাচে শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেয়া ২৭৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে গৌতম গম্ভীর ও মহেদ্র সিং ধোনির দারুণ দুটি ইনিংসে জয় পায় ভারত। লঙ্কানদের বাজে বোলিং আর ফিল্ডিংয়ের মহড়ায় গম্ভীর খেলেন ৯৭ রানের ইনিংস আর ধোনির ব্যাট থেকে আসে ৯৭ রান। ফলে ১২ বল আর ৬ উইকেট হাতে রেখেই জয় পায় টিম ইন্ডিয়া।

১৫ বছর পর শিরোপা উঁচিয়ে ধরার স্বপ্ন নস্যাৎ হওয়াটা লঙ্কানদের অনেকেই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি। ম্যাচের স্বচ্ছতা নিয়েও কথা হয়েছে দফায় দফায়। তবে নয় বছর পর বড় একটা বোমা ফাটালেন সে সময়ের লঙ্কান ক্রীড়ামন্ত্রী।

স্থানীয় টিভি চ্যানেল সিরাসাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী মাহিনদানান্দা আলুথগামাগে বলেছেন, “আজকে আমি আপনাদের বলছি, ২০১১ বিশ্বকাপ আমরা বিক্রি করেছি। আমি এমনটা বলছি, কারণ তখন আমি ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলাম।”

তৎকালীন ক্রীড়ামন্ত্রী আলুথগামাগে এখনও আছেন লঙ্কান মন্ত্রী পরিষদে। ঘটনাটি জানানোর পর তার সম্পূর্ণ দায় নিচ্ছেন বর্তমান জ্বালানি মন্ত্রী। তিনি বলেন, “দেশের কথা ভেবে আমি এমনটা বলতে চাইনি। তবে সেই ম্যাচটা আমরা জয়ের পথেই ছিলাম।”

সাক্ষাৎকারে আলুথগামাগে বলেছেন “আমি আবারও বলছি, ২০১১ সালে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ, যেটা আমরা জিততে পারতাম, আসলে সেটা পাতানো হয়েছিলো। আমি যে কারও সঙ্গে এটা নিয়ে বিতর্ক করতে প্রস্তুত। আমি ক্রিকেটারদের এর সঙ্গে জড়াতে চাই না, তবে তাদের মধ্যেও একটা অংশ ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত ছিলো।”

ম্যাচ পাতানোর কথা দাবি নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়কে দায়ী করেননি আলুথগামাগে। তবে এমন মন্তব্যের পর আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটের (আকু) কাছে প্রমাণ দিতে বলে একটি টুইট করেছেন সে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার নেতৃত্ব দেয়া কুমারা সাঙ্গাকারা, “সে যে মন্তব্য করেছে সে অনুযায়ী আইসিসি এবং অ্যান্টি করাপশন ইউনিটের কাছে প্রমাণ দেয়া দরকার।”

তবে সে ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান জয়াবর্ধনে এক হাত নিয়েছেন আলুথগামাগেকে। রাজনৈতিক কারণে এমন মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। টুইটারে তিনি লিখেছেন, 'নির্বাচন কাছে আসছে আর সার্কাস শুরু হচ্ছে... নাম এবং প্রমাণ?'

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: